পাতা:ওয়ালেসের জীবনবৃত্ত - যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৫২ ওয়ালেসের জীবনবৃত্ত। ঘজ্ঞ অনুষ্ঠিত হইল।. পিশাচের। সৈই বীরদেহ খণ্ড খণ্ড করিয়া চতু র্দিকে বিক্ষিপ্ত করিল! তাহার মস্তক লওন সেতুর উপর, দক্ষিণ হন্ত নিউকাসল, সেতুর উপর স্থাপিত করা হইল। বাম হক বারউইকে, দক্ষিণপদ পার্থে, ও বামপদ আবার্ডিনে প্রেরিত করা হইল। এইরূপে সেই মহাবীর প্রাতঃস্মরণীয়-চরিত স্কটিশ পেটি য়ট স্বদেশের জন্য, স্বজাতির জন্য এবং অনন্তকাল মানব জাতির শিক্ষার জন্য আত্মােৎসর্গ করিলেন। ধন্য ওয়ালে।. ধন্য তােমার আত্মােৎসর্গ ! পুণ্যভূমি সেই দেশ, যে দেশে তােমার মত পুণ্যাত্মা জন্মগ্রহণ করেন। ধন্য সেই জাতি, তােমার মত লােক আত্মজন্ম দ্বারা যে জাতিকে পূত ও অনুগৃহীত করেন। | যে সৰ্ব্বসংহারক যম জগতের কোন প্রাণীকে ছাড়ে না, ভাল মন্দ বিচার করে না, সেই যম ওয়ালেসের দেববাচিত গুণগ্ৰাম সাতে পারিয়া, অকালে তাহাকে কুক্ষিগত করিল ! কিন্তু মুঢ় ! তােমার বৃথা চেষ্টা! যিনি নিজের অদ্ভুত আত্মোৎসর্গে অমরত্ব লাভ করিয়াছেন, তাহাকে কুক্ষিগুপ্ত করিয়া রাখা তােমার অসাধ্য। তুমি মুখ তাই তার গলিত ঘৃণ্য স্থল শরীর লইয়া পরিতৃপ্ত হইয়াছ! ঐ দেখ ওয়ালেস, বিদ্যুন্ময় সূক্ষ্ম শরীরে দাসত্ব-নিপীড়িত মৃতপ্রায় কোটী কোটী মানবদেহে জীবন-সঞ্চার করিতেছেন। ঐ দেখ প্রচও বায়ুতাড়নে তাহার চিতাভস্মের এক একটী রেণু অগ্নিস্ফুলিঙ্গ রূপে সমস্ত পৃথিবীতে বিক্ষিপ্ত হইয়া পড়িতেছে। সেই বিদ্যুৎস্পষ্ট অগ্নিস্ফুলিঙ্গ স্পর্শ করা বমেরও অসাধ্য। সেই অগ্নি স্ফুলিঙ্গ যাহাকে স্পর্শ করে, সেই অমরত্ব লাভ করে। সে বিদ্যুৎ যে শরীরে সংক্রামিত হয়, সে আর মৃত্যুকে ভয় করে না। যাহার স্থল শরীরে মমতা; স্থলশরীর ভােগ্য ভােগবিলাসিতায় আসক্তি, সেই ব্যক্তিই মৃত্যুভয়ে জড়ীভুক্ত হয়। উৎসর্গীকৃত প্রাণ নিষ্কাম যােঙ্গী মৃত্যুভয় জানে না, কর্তব্যপালনের । জন্য মৃত্যুকে প্রিয় সুহৃৎভাবে আলিঙ্গন করে। তাই ঘাতকগণের উত্তোলিত খড়গ দেখিয়াও ওয়ালেসের মুখ বিষন্ন হয় নাই। তাই তিনি জননী জন্মভূমির জন্য স্থল শরীর বিসৰ্জন করিতেছেন বলিয়া