পাতা:ওয়ালেসের জীবনবৃত্ত - যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১০। ওয়ালেসের জীবনবৃত্ত। সহিত বিবাহ হওয়ায়, সেই অবধি ওয়ালেস-বংশ রিকার্টন-দুর্গ পবিত্যাগ করিয়া গ্রেগী দুর্গে অবস্থান কবেন। সেই সময় হইতে বিকার্টনদুর্গ জীর্ণ-সংস্কারভাবে ক্রমে বিলয়সাগরে মগ্ন হইয়াছে। এক্ষণে আর ইহার চিহ্নমাত্রও নাই।। যাহা হউক রিকার্টন ওয়ালেসের একটী কীর্তিস্থল। ১২৯২ খ্ৰীষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি এখানে আইসেন, এবং একমাস অতীত হইতে না হইতেই একটী অভাবনীয় ঘটনায় তাহাকে এখান হইতে পলায়ন করিতে হয়। এক দিন তিনি আর্ভিং নদীতে মৎস্য ধরিতে গিয়াছিলেন। জাল বহন করিবাব নিমিত্ত একজন মাত্র বালক তাহার সঙ্গে ছিল। তিনি অনেক গুলি মৎস্য ধরিয়াছেন,এমন সময় গবর্ণর পার্শী আনুমাত্রিক-বর্গ সহ আর্ভিং নদীর ধার দিয়া গ্লাগাের মেলা দেখিতে যাইতেছিলেন। তাহার শরীর-রক্ষক পঞ্চ অশ্বারােহী, কৌতূহল-পরতন্ত্র হইয়া ওয়ালে যথায় মৎস্য ধরিতেছিলেন, তথায় আসিয়া মাছ ধরা দেখিতে লাগিল। জালে অনেক গুলি সুন্দর সুন্দর মাছ উঠিল দেখিয়া তাহারা গবর্ণরের জন্য সে গুলি সমস্ত চাহিল। ওয়ালেস তাহার কিয়দংশ দিবার জন্য বালককে আদেশ করিলেন। কিন্তু তাহারা সমস্ত চাহিল। বলিল “এবাবে জালে যাহা উঠিযাছে সমস্তই গবর্ণরের প্রাপ্য ; পরে জলে যত বার ইচ্ছা জাল ফেলিয়া যত ইচ্ছা তুমি লইতে পার।” ইহাতে ওয়ালে বিরক্ত হইয়া বলিলেন, আজ এই মৎস্যে একজন বৃদ্ধ নিমন্ত্রিত নাইটের অভ্যর্থনা করিতে হইবে, অতএব তােমরা যদি ভদ্রলােক হও ত যাহা দিয়াছি তাহাই লইয়া যাইবে।” গর্বিত ইংরাজ ইহাতে নিরস্ত হইবার নহে। তাহাদিগের মধ্যে একজন অশ্বপৃষ্ঠ হইতে নামিয়া বালকের হস্ত হইতে সমস্ত মাছ কাড়িয়া লইল। ওয়ালেস বলিয়া উঠিলেন- “ তােমার এ অতি অন্যায়।” দৃপ্ত ইংরাজ বলিয়া উঠিল--“কি আমার অতি অন্যায় ? দুরাত্মন! তবে দেখ। ”—এই বলিয়া সে অসি হস্তে ওয়ালেসের দিকে ধাবিত হইল। ওয়ালেসেব হস্তে একটা বর্ষা ভিন্ন আর কোন অস্ত্র ছিল না। ওয়ালেস সেই বর্ষা দ্বারাই আততায়ীকে ভূমিসাৎ করিলেন।