পাতা:ওয়ালেসের জীবনবৃত্ত - যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪ ওয়ালেসের জীবনবৃত্ত। হস্তগত হইলে, তাহারা গুপ্ত দ্বার দিয়া ক্রমেই পশ্চাদ্বী প্রাচীরের আশ্রয় গ্রহণ করিবেন; সমস্ত প্রাচীরগুলি শত্রুগণের হস্তগত হইলে তাহারা শেষ গুপ্ত দ্বার দিয়া নিবিড়তর অরণ্যমধ্যে প্রবেশ করিলেন। কিংক্লেভন যুদ্ধে নিহত সার জন্ বটুলারের পুত্র সার জেমস বট লার পিতৃবধের প্রতিশােধ লইবার নিমিত্ত আক্রমণকারী ইংরাজসেনার অধিনায়কত্ব গ্রহণ করিয়াছেন। তিনি দুই শতমাত্র অশ্বারােহী সঙ্গে লইয়া অরণ্যমধ্যে প্রবেশ করিলেন। অবশিষ্ট সৈন্য লইয়া সার জিরার্ড অরণ্য ঘিরিয়া রহিলেন। বলার যখন সসৈন্যে আসিয়া উপস্থিত হইলেন, তখন ওয়ালেসের দুর্গ সমাপ্ত হয় নাই। ওয়ালে অধিকাংশ সঙ্গীদিগকে দুর্গের সমাপনে নিযুক্ত করিয়া অল্পমাত্র অনুযাত্রিক সঙ্গে লইয়া দুর্গ হইতে বহির্গত হইলেন। ইংরাজদিগের সঙ্গে এক শত চল্লিশ জন তীরন্দাজ ও অশীতিসংখ্যক বর্ষাধারী ছিল। কিন্তু ওয়ালেসের সঙ্গে বিংশতি জন মাত্র তীরন্দাজ ছিল। ওয়ালেসের নিজ হস্তে এক খানি প্রকাণ্ড ধনু ছিল। ইহা তিনি ভিন্ন আর কেহই টানিতে পারি না। তিনি বৃক্ষশাখা-নির্মিত কৃত্রিম দুর্গমধ্য হইতে এই ভীম ও প্রকাণ্ড ধনুতে বাণযােজনা করিয়া অসংখ্য ইংরাজকে ভূপাতিত করিতে লাগিলেন। কিন্তু তাহার তীরন্দাজ সকল ইংরাজ তীরন্দাজগণ কর্তৃক ক্ষতবিক্ষত হইতে লাগিল দেখিয়া তিনি তাহাদিগকে শাখাভ্যন্তবে অধিকতর গুপ্ত-দেহ হইয়া বাণ নিক্ষেপ করিতে বলিলেন, এবং স্বয়ং অশ্রান্তভাবে ধনু আকর্ষণ করিতে লাগিলেন। অবশেষে তিনিও কণ্ঠদেশে বাণবিদ্ধ হইলেন। সৌভাগ্যক্রমে তিনি গলদেশে লৌহকলার (Collar) পরিধান করিয়া ছিলেন, এই জন্য সেই বেধ সাংঘাতিক হয় নাই। তাহার তীক্ষ্ণ। দৃষ্টি তৎক্ষণাৎ আততায়ীর উপর পতিত হইল। তিনি অকুতােভয়ে সলীল গতিতে দুর্গ হইতে বহির্গত হইয়া পলায়ুনােন্মুখ অপরাধীকে, ধরিয়া খ দ্বারা তাহার কণ্ঠচ্ছেদ করিলেন। তিনি স্বয়ং অসাধারণ বীরত্ব প্রকাশ করিতে লাগিলেন বটে, ও তাহার অমােঘ শরে পঞ্চদশ ইংরাজ শমন-সদনে প্রেরিত হইল বটে কিন্তু তাহার ধনুধরেরা কমে ।