পাতা:ওয়ালেসের জীবনবৃত্ত - যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ওয়ালেসের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। ৩৭ নি তাহাকে চিনিতে পারিয়া হেরন ও বটলারের নিকট এই সংবাদ নাইল। তাহারা তৎক্ষণাৎ সেই স্ত্রীলােককে তাহাদিগের নিকট মানাইলেন। সে ওয়ালেসের বিষয়ে সম্পূর্ণ অজ্ঞতা প্রকাশ করিল। হারা বলিলেন, “যদি তুমি প্রকৃত ঠিক কথা ব্যক্ত না কর, তাহা হইলে তােমাকে জলন্ত চিতায় আরােহণ করিতে হইবে, আর যদি মুক্ত কণ্ঠে প্রকৃত সত্য প্রকাশ কর, তাহা হইলে তােমায় এন ও উপাধিতে অলঙ্কৃত করা হইবে, এবং তােমার মনােমত এক জন নাইটের সহিত তােমার বিবাহ দেওয়া হইবে”। ভয়ে ও প্রলােভনে অভিভূত হইয়া সেই রমণী ওয়ালেসের সহিত বিশ্বাস ভঙ্গ করিতে স্বীকৃত হইল। ওয়ালে কোন সময় আসিবেন, তাহা সে ঠিক করিয়া বলিল। সেই সময়ে সেই রমণীর গৃহের বাহিরে কোন গুপ্ত স্থানে সশঃ পুরুষ সকল আসিয়া লুকাইয়া রহিল। কুহকী ওয়ালেসকে দেখিবার নিমিত্ত তাহাদিগের হৃদয় আনন্দে উৎফুল্ল হইয়া উঠিল। এদিকে ওয়ালেস এ ষড়যন্ত্রের বিষয় ঘুণাক্ষরেও কিছু জানিতে না পারিয়া প্রতিশ্রুত সময়ে প্রণয়িনীর নিকট আসিয়া উপস্থিত হইলেন। বিশ্বাসঘাতিনী বাহিক আনন্দ প্রকাশ করিয়া তাহাকে গ্রহণ করিল। ওয়ালে কিয়ৎক্ষণ বিশ্রামের পরই প্রস্থান করিতে ইচ্ছুক হইলেন। পিশাচী তাহাকে সমস্ত রাত্রি তথায় যাপন করিতে অনুরোধ করিল। কিন্তু ওয়ালেস বলিলেন-“সহচরবৃন্দকে একবার না দেখিলে আমার নিদ্রা হইবে না।” পাপীয়সী দেখিল যে, ষড়যন্ত্র বিফল হইলে তাহার মৃত্যু নিশ্চয়; সুতরাং কাঁদিয়া কাটিয়া ওয়ালেকে রাত্রি যাপন করিতে বিশেষ অনুরােধ করিল। যখন ওয়ালে কিছুতেই সম্মত হইলেন না, তখন সে উচ্চৈঃস্বরে কাঁদিয়া উঠিল। নিজের মৃত্যু নিশ্চয় জানিয়া, সে অনুতাপানলে দগ্ধ হইতে লাগিল ; ভাবিল—“যে মৃত্যুর হস্ত হইতে আত্মরক্ষা করিবার জন্য আমি প্রাণাপেক্ষা প্রিয়তমকে মৃত্যুমুখে পতিত করিতে উদ্যত হইয়াছিলাম, সে মৃত্যু হইতে রক্ষা পাইলাম কই ? এ জন্মে যাহা হইবার তা ত হইল, এক্ষণে পরকালে আমার গতি কি