পাতা:কজ্জলী - পরশুরাম (১৯৪৯).pdf/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কজ্জলী

লাঠিটা নিয়ে ঢ্যাঙা আর বেঁটেকে একটু গুতো দিয়ে বললেন—গেট আপ টিমি, গেট আপ ব্লটো। তারা বুনো শুয়োরের মতন ঘোঁত ঘোঁত ক’রে কি বললে শুনতে পেলুম না। আন্দাজে বুঝলুম এখনও তাদের ওঠবার অবস্থা হয় নি। মেম আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন - চ্যাটার্জি, তুমি খাবে? আপত্তি নেই তো?

 মহা ফাঁপরে পড়া গেল। ম্লেচ্ছ নাবীব স্বহস্তে মিশ্রিত, কিন্তু ভুরভূরে খোশবায়, শীতটাও খুব পড়েছে। শাস্ত্রে চা খেতে বারণ কোথাও নেই। তা ছাড়া রেলগাড়ির মতন বৃহৎ কাষ্ঠে ব’সে শীত নিবারণের জন্যে ঔষধার্থে যদি চা পান করা যায় তবে নিশ্চয়ই দোষ নাস্তি। বললুম - ম্যাডাম লক্ষ্মী, তুমি যখন নিজ হাতে চা দিচ্ছ, তখন কেন খাব না। তবে রুটিটা থাক।

 চায়ে মনের কপাট খুলে যায়, খেতে খেতে অনেক বেফাঁস কথা মুখ দিয়ে বেরিয়ে পড়ে। অশ্বত্থাম। যেমন দুধের অভাবে পিটুলি-গোলা খেয়ে আহ্লাদে নৃত্য করতেন, নিরীহ বাঙালী তেমনি চায়েতেই মদেব নেশা জমায়। বঙ্কিম চাটুজ্যে তারিফ ক'রে চা খেতে শেখেন নি, সর্দি-টর্দি হ'লে আদা-নুন দিয়ে খেতেন,— তাতেই

১২২