পাতা:কজ্জলী - পরশুরাম (১৯৪৯).pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কজ্জলী

একটা লোক হাঁকছে— দো-দো আনে কৌয়ে, দো-দো আনে। ভাবলুম বুঝি পেশোয়ারী কি মূলতানী কাগ হবে, নিশ্চয় পড়তে জানে। একটা ধাড়ি-গোছ কাগের কাছে গিয়ে শিস দিয়ে বললুম— পড়ো ময়না, চিত্রকোট কি ঘাট পর— সীতাবাম—রাধাকিষণ বোলো—চুচ্চুঃ। ব্যাটা ঠোকরাতে এল। কাগ-ওলা বললে— বাবু, কৌয়া নহি পঢ়তা। তবে কি করে বাপু? কাগেব মাংস তো শুনতে পাই তেতো, লোকে বুঝি সুক্ত বানাবার জন্যে কেনে? বললে তাও নয়। এই কাগ খাঁচায় কয়েদ রয়েছে, দু-দু আনা খরচ ক’রে যতগুলি ইচ্ছে কিনে নিয়ে জীবকে বন্ধনদশা হ’তে মুক্তি দাও, তোমারও মুক্তি হবে। ভাবলুম মোক্ষের মার্গ কি বিচিত্র। অন্য লোকে মুক্তি পাবে তাই এই গরিব কাগ-ওলা বেচারা নিজের পরকাল নষ্ট করছে। একেই বলে conservation of virtue, একজন পাপ না করলে আর একজনের পুণ্য হবার জো নাই।

 এই সময় একটি হ্যাটকোটধারী বাইশ-তেইশ বছরের ছেলে ঘরে আসিয়া পাখার রেগুলেটার শেষ পর্যন্ত ঠেলিয়া দিয়া হ্যাটটি আছড়াইয়া ফেলিয়া ফরাশের উপর থপ করিয়া বসিয়া পড়িল। এর নাম সত্যব্রত,