পাতা:কজ্জলী - পরশুরাম (১৯৪৯).pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

জাবালি

হইয়াছে, এখন খানকয়েক মোটা মোটা পুরোডাশ সেঁকিলেই রন্ধন শেষ হয়। হিন্দ্রলিনী যবপিণ্ড থাসিতে থাসিতে নানাপ্রকার সাংসারিক ভাবনা ভাবিতে লাগিলেন। তাঁর এতখানি বয়স হইল, কিন্তু এ পর্যন্ত পুত্রমুখ দেখিলেন না। স্বামীর পুন্নাম নরকের ভয় নাই, পরলোকে পিণ্ডেরও ভাবনা নাই— ইহলোকে দু-বেলা নিয়মিত পিণ্ড পাইলেই তিনি সন্তুষ্ট। পোষ্যপুত্রেব কথা তুলিলে বলেন পুত্রের অভাব কি, যখন যাকে ইচ্ছা পুত্র মনে করিলেই হয়। কিবা কথার শ্রী! স্বামী যদি মানুষের মতন মানুষ হইতেন তাহা হইলে হিন্দ্রলিনীব অত খেদ থাকিত না। কিন্তু তিনি একটি সৃষ্টিবহির্ভূত লোক, কাহারও সহিত বনাইয়া চলিতে পারিলেন না। সাধে কি লোকে তাঁকে আড়ালে পাষণ্ড বলে! ত্রিসন্ধ্যা নাই, জপতপ নাই, অগ্নিহোত্র নাই, কেবল তর্ক করিয়া লোক চটাইতে পারেন। অমন যে রামচন্দ্র, ব্রাহ্মণ তাঁকেও চটাইয়াছেন। যতদিন দশবথ ছিলেন, অন্নবস্ত্রের অভাব হয় নাই। বৃদ্ধ রাজা স্ত্রৈণ ছিলেন বটে, কিন্তু নজরটা তাঁর উচ্চ ছিল। এখন কি হইবে ভবিতব্যতাই জানেন। ভরত তো নন্দিগ্রামে পাদুকাপূজা লইয়া বিব্রত। সচিব সুমন্ত্র এখন রাজকার্য দেখিতেছে; কিন্তু সে অত্যন্ত

৫৩