পাতা:কজ্জলী - পরশুরাম (১৯৪৯).pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কজ্জলী

কৃপণ, ঘোড়ার বল্‌গা টানিয়া তার সকল বিষয়েই টানাটানি করা অভ্যাস হইয়া গিয়াছে। রাজবাটী হইতে যে সামান্য বৃত্তি পাওয়া যায় তাতে এই দুর্মূল্যের দিনে সংসার চলে না। হিন্দ্রলিনী তাঁর বাবার কাছে শুনিয়াছিলেন, সত্যযুগে এক কপর্দকে সাত কলস খাঁটী হৈয়ঙ্গবীন মিলিত, কিন্তু এই দগ্ধ ত্রেতাযুগৈ তিন কলস মাত্র পাওয়া যায়, তাও ভঁয়ষা। ঘৃতের জন্য জাবালির কিছু ঋণ হইয়াছে, কিন্তু শোধ করার ক্ষমতা নাই। নীবার ধান্য যা সঞ্চিত ছিল ফুরাইয়া আসিয়াছে, পরিধেয় জীর্ণ হইয়াছে, গৃহে অর্থাগম নাই, এদিকে জাবালি শত্রুসংখ্যা বাড়াইতেছেন। স্বামীর সংসর্গদোষে হিন্দ্রলিনীও অনাচারে অভ্যস্তা হইয়াছেন। অযোধ্যার নিষ্ঠাবতীগণ তাঁহাকে দেখিলে শূকরীর ন্যায় ওষ্ঠ কুঞ্চিত করে। হিন্দ্রলিনী আর সহ্য করিতে পারেন না, আজ তিনি আহারান্তে স্বামীকে কিছু কটুবাক্য শুনাইবেন।

 অঙ্গনের বাহিরে হুংকার করিয়া কে বলিল—‘হংহো জাবালে, হংহো!’ হিন্দ্রলিনী ত্রস্তা হইয়া দেখিলেন দশবার জন ক্ষুদ্রকায় ঋষি কুটীরদ্বারে দণ্ডায়মান। তাঁহাদের খর্ব বপু বিরল শ্মশ্রু ও স্ফীত উদর দেখিয়া হিন্দ্রলিনী বুঝিলেন তাঁহারা বালখিল্য মুনি।

৫৪