বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কজ্জলী - পরশুরাম (১৯৪৯).pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জাবালি

বাষ্পসমাকুল, গম্ভীর আরাবে বিধূনিত। উভয় পার্শ্বে জ্বলন্ত চুল্লীর উপর শ্রেণীবদ্ধ অতিকায় কুম্ভসকল সজ্জিত আছে, তাহা হইতে নিরন্তর শ্বেতবর্ণ বাষ্প ও আর্তনাদ উত্থিত হইতেছে। নীলবর্ণ যমকিংকরগণ ইন্ধননিক্ষেপের জন্য মধ্যে মধ্যে চুল্লীদ্বার খুলিতেছে, জ্বলন্ত অনলচ্ছটায় তাহাদের মুখ উল্কাপিণ্ডের ন্যায় উদ্ভাসিত হইতেছে।

 কৃতান্ত কহিলেন— ‘হে মহর্ষে, এই যে রজতনির্মিত কিংকিণীজালমণ্ডিত সুবৃহৎ কুম্ভ দেখিতেছে, ইহাতে নহুষ যযাতি দুষ্মন্ত প্রভৃতি মহাযশা মহীপালগণ পরিপক্ক হইতেছেন। ইঁহারা প্রায় সকলেই সংশোধিত হইয়া গিয়াছেন, কেবল যযাতির কিঞ্চিৎ বিলম্ব আছে। আর এক প্রহরের মধ্যে সকলেই বিগতপাপ হইয়া অমরাবতীতে গমন করিবেন। ঐ যে বৈদূর্যখচিত হিরণ্ময় কুম্ভ দেখিতেছ, উহার তপ্ত তৈলে ইন্দ্রাদি দেবগণ মধ্যে মধ্যে অবগাহন করিয়া থাকেন। গৌতমের অভিশাপের পরে সহস্রাক্ষ পুরন্দরকে বহুকাল এই কুম্ভমধ্যে বাস করিতে হইয়াছিল। নিরবচ্ছিন্ন অগ্নিপ্রয়োগে ইহার তলদেশ ক্ষয়প্রাপ্ত হইয়াছে। এই যে রুদ্রাক্ষমালাবেষ্টিত গৈরিকবর্ণ প্রকাণ্ড কুম্ভ দেখিতেছ, ইহার অভ্যন্তরে ভাগব দুর্বাসা কৌশিক প্রভৃতি উগ্রতপা মহর্ষিগণ সিদ্ধ হইতেছেন।’

৭৭