পাতা:কথামালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (সচিত্র).pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কথামালা
৩৯

আমি কিছু দেখিতে পাই না; আপনি আমার চক্ষু ভাল করিয়া দিন; আমি আপনাকে বিলক্ষণ পুরস্কার দিব; কিন্তু ভাল করিতে না পারিলে, আপনি কিছুই পাইবেন না।

 চিকিৎসক, বৃদ্ধার প্রস্তাবে সম্মত হইয়া, পরদিন প্রাতঃকালে তাঁহার আলয়ে উপস্থিত হইলেন। বৃদ্ধার গৃহ নানাবিধ দ্রব্যে পরিপূর্ণ দেখিয়া, চিকিৎসকের লোভ জন্মিল। তিনি স্থির করিলেন, প্রতিদিন ইহাকে দেখিতে আসিব, এবং এক একটী দ্রব্য লইয়া যাইব। এজন্য, যাহাতে শীঘ্র তাহার পীড়ার শান্তি হইতে পারে, সেরূপ ঔষধ না দিয়া, কিছুদিন গোলমাল করিয়া কাটাইলেন। পরে একে একে সমস্ত দ্রব্যাদি লইয়া গিয়া, তিনি রীতিমত ঔষধ দিতে আরম্ভ করিলেন। বৃদ্ধার চক্ষু অল্পদিনেই পূর্ব্ববৎ নির্দ্দোষ হইল। তিনি দেখিলেন, তাঁহার গৃহে যে নানাবিধ দ্রব্য ছিল, তাহার একটীও নাই; অনুসন্ধান দ্বারা জানিতে পারিলেন, চিকিৎসক একে একে সমুদয় লইয়া গিয়াছেন।

 একদিন, চিকিৎসক বৃদ্ধাকে বলিলেন, আমার চিকিৎসায় তোমার পীড়ার শান্তি হইয়াছে। পীড়ার শান্তি হইলে, আমায় পুরস্কার দিবে বলিয়াছিলে। এক্ষণে প্রতিশ্রুত পুরস্কার দিয়া সন্তুষ্ট করিয়া, আমায় বিদায় কর। বৃদ্ধা, চিকিৎসকের আচরণে অতিশয়