এবং পূর্ব্বেই আভাসে বলা গিয়াছে মানুষের মধ্যে তাঁহার সম্পর্ক ছিল কেবল গিরিবালার সহিত।
গিরিবালার ভাইরা ইস্কুলে যাইত এবং ফিরিয়া আসিয়া মূঢ় ভগ্নীটিকে কোন দিন জিজ্ঞাসা করিত পৃথিবীর আকার কিরূপ, কোন দিন বা প্রশ্ন করিত সূর্য্য বড় না পৃথিবী বড়, সে যখন ভূল বলিত তখন তাহার প্রতি বিপুল অবজ্ঞা দেখাইয়া ভ্রম সংশোধন করিত। সূর্য্য পৃথিবী অপেক্ষা বৃহৎ এ মতটা যদি গিরিবালার নিকট প্রমাণাভাবে অসিদ্ধ বলিয়া বোধ হইত এবং সেই সন্দেহ যদি সে সাহস করিয়া প্রকাশ করিত, তবে তাহার ভাইরা তাহাকে দ্বিগুণ উপেক্ষাভরে কহিত “ইস্! আমাদের বইয়ে লেখা আছে আর তুই—”
ছাপার বইয়ে এমন কথা লেখা আছে শুনিয়া গিরিবালা সম্পূর্ণ নিরুত্তর হইয়া যাইত দ্বিতীয় আর কোন প্রমাণ তাহার নিকট আবশ্যক বোধ হইত না।
কিন্তু তাহার মনে মনে বড় ইচ্ছা করিত সেও দাদাদের মত বই লইয়া পড়ে। কোন কোন দিন সে আপন ঘরে বসিয়া কোন একটা বই খুলিয়া বিড়বিড় করিয়া পড়ার ভান করিত এবং অনর্গল পাতা উল্টাইয়া যাইত। ছাপার কালে কালো ছোট ছোট অপরিচিত অক্ষরগুলি কি যেন এক মহারহস্যশালার সিংহদ্বারে দলে দলে সার বাঁধিয়া স্কন্ধের উপরে ইকার ঐকার রেফ উঁচাইয়া পাহারা দিত, গিরিবালার কোন প্রশ্নের কোনই উত্তর করিত না। কথা