“কাপালিক!”
কাপালিক কহিল “কি?”
“পানীয়ং দেহি মে”
কাপালিক পুনরপি তাঁহাকে সুরা পান করাইল।
নবকুমার কহিলেন, “আর বিলম্ব কি?”
কাপালিক উত্তর করিল “আর বিলম্ব কি!”
নবকুমার ভীমনাদে ডাকিলেন “কপালকুণ্ডলে!”
কপালকুণ্ডলা শুনিয়া চমকিতা হইলেন। ইদানীন্তন কেহ তাঁহাকে কপালকুণ্ডলা বলিয়া ডাকিত না। তিনি মুখ ফিরাইয়া দাঁড়াইলেন। নবকুমার ও কাপালিক তাঁহার সম্মুখে আসিলেন। কপালকুণ্ডলা প্রথমে তাঁহাদিগকে চিনিতে পারিলেন না—কহিলেন,
“তোমরা কে? যমদূত?
পরক্ষণেই চিনিতে পারিয়া কহিলেন, “না না পিতঃ, তুমি কি আমায় বলি দিতে আসিয়াছ?”
নবকুমার দৃঢ়মুষ্টিতে কপালকুণ্ডলার হস্ত ধারণ করিলেন। কাপালিক কৰুণাদ্র, মধুময় স্বরে কহিলেন,
“বংসে! আমাদিগের সঙ্গে আইস।” এই বলিয়া কাপালিক শ্মশানাভিমুখে পথ দেখাইয়া চলিলেন।
কপালকুণ্ডলা আকাশে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিলেন; যথায় গগনবিহারিণী ভয়ঙ্করী দেখিয়াছিলেন, সেই দিকে চাহিলেন, দেখিলেন রণরঙ্গিণী খল খল হাসিতেছে; এক দীর্ঘ ত্রিশূল করে ধরিয়া কাপালিকগতপথ প্রতি সঙ্কেত করিতেছে। কপালকুণ্ডলা ভবিতব্যবিমূঢ়ার ন্যায় বিনা