পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভূতপূর্ব্বে।
৭৯

নিস্তার নাই। আকবরশাহের মৃত্যু হইলেই তাঁহারও প্রাণান্ত হইবে;—মেহের উন্নিসা সেলিমের মহিষী হইবেন। লুতফ্-উন্নিসা সিংহাসনের আশা ত্যাগ করিলেন।

 মহম্মদীয় সম্রাট-কুল-গৌরব আকবরের পরমায়ুঃ শেষ হইয়া আসিল। যে প্রচণ্ড সূর্য্যের প্রভায় তুরকী হইতে ব্রহ্মপুত্র পর্যন্ত প্রদীপ্ত হইয়াছিল, সে সূর্য্য অস্তগামী হইল। এ সময়ে লুতফ্-উন্নিসা আত্ম প্রাধান্য রক্ষার জন্য এক দুঃসাহসিক সঙ্কল্প করিলেন।

 রাজপুতপতি রাজা মানসিংহের ভগিনী সেলিমের প্রধানা মহিষী। খস্রু তাঁহার পুত্ত্র। একদিন তাঁহার সহিত আকবর শাহের পীড়িত শরীর সম্বন্ধে লুতফ্-উন্নিসার কথোপকথন হইতে ছিল; রাজপুত কন্যা এক্ষণে বাদশাহ পত্নী হইবেন, এই কথার প্রসঙ্গ করিয়া লুৎফ-উন্নিসা তাঁহাকে অভিনন্দন করিতেছিলেন, প্রত্যুত্তরে খস্রুর জননী কহিলেন, “বাদশাহের মহিষী হইলে মনুষ্য জন্ম সার্থক বটে, কিন্তু যে বাদশাহ-জননী সেই সর্ব্বোপরি।” উত্তর শুনিবামাত্র এক অপূর্ব্বচিন্তিত অভিসন্ধি লুৎফ্-উন্নিসার হৃদয়ে উদয় হইল। তনিি প্রত্যুত্তর করিলেন, “তাহাই হউন না কেন? সেওত আপনার ইচ্ছাধীন।” বেগম কহিলেন, “সে কি?” চতুরা উত্তর করিলেন, “যুবরাজ পুত্ত্র খস্রুকে সিংহাসন দান করুন।”

 বেগম কোন উত্তর করিলেন না। সে দিন এ প্রসঙ্গ