পাতা:কবিতাসংগ্রহ ১ - তপোধীর ভট্টাচার্য.pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছোবলে-ছোবলে
বিষ ঢেলে দিচ্ছে অন্ধকার
প্রতিটি অঙ্কুর ঝরে যাচ্ছে ভালবাসা থেকে আর প্রত্যেকের
ভূমিকা বদলে যাচ্ছে হিম শূন্যতায়
যাব কোন দিকে? আগুনের গান শুনি
জলের গভীরে

তেলের শিশি ভেঙেছে বলে খুকুর ওপরে আর রাগ করি না কেউ
ভেঙে-চুরে তছনছ করি জাতককথার পরম্পরা

সাগর-পেরিয়ে-আসা খোককসের কাছে চেয়ে নিই পক্ষিরাজ ঘোড়া
রুপোর কাঠির ছোঁয়া নিয়ে ঘুমোক নাহয় দশদিক
যতদিন বাঁচি সুখে বাঁচি কৌপিন-পরানো ভাগ্যের লীলায়
খোক্কসের দেশ থেকে নিয়ে আসি থোকা-থোকা
পদ্মেতে-লুকোনো সুতো-শঙ্খ সাপ, নিদালির রাতে পাকে-পাকে
জড়ালে জড়াক আছে বেঙ্গমা-বেঙ্গমী
এসো, পাশ ফিরে শুই
স্মৃতির ভারত ভেঙেছে ভাঙুক আছে পক্ষিরাজ
এসো, পাশ ফিরে শুই
যত রবি জলুক না দাউদাউ অযোধ্যায় কে বা আঁখি মেলে
পোড়ে তো পুড়ুক বুক
পিঠ এখনো রয়েছে। এসো, পাশ ফিরে শুই
ছাই-ফেলতে ভাঙা কুলো তুলে আনি ইন্দ্রপ্রস্থ থেকে
খাণ্ডব-দহন হবে খোক্কসের বরে

ইতিহাস গোলকধাঁধার মতো পথিক ভোলায় গিরি-মরু-জলপথে
কারা আগে এসেছিল, কারা এল পরে?
লোহা দিয়ে তামাকে হটিয়ে কোন্ পুরন্দর কত রাজত্ব গড়েছে
কত রক্ত ঝরেছিল হরপ্পার প্রাচীন ধুলোয়
কান পেতে শোনো, কত অনার্য নারীর লুণ্ঠিত যৌবন হাহাকার
করেছিল লুঠেরা আর্যের পায়ে, কত শিশু
দাস হয়েছিল জন্ম জন্ম ধরে, পরিত্রাণহীন, বিজেতার বিলাসী বৈভবে
ডুবে গিয়েছিল মানুষের আদি-পরিচয়
গোলকধাঁধায় কবে ওরা হারিয়ে গিয়েছে, মিশে গেছে লোকায়ত
মুগ্ধবোধ আর যন্ত্রণার নিঃসঙ্গ সময়
কেউ জানে কবে কোন্ জৈন তীর্থঙ্কর আর শ্রমণের মাধুকরী পথে-পথান্তরে
ছড়িয়ে গিয়েছে? তিব্বতী লামার কালচক্রযানে

১১১