>> e করুণা হইলে দীর্ঘকাল আত্মবলি দিতে হইবে । এই সুন্দর পাটলিপুত্র নগর সুন্দর রাখিতে হইলে পঞ্চনদের সীমান্তে পাৰ্ব্বত্য নদী ও উপত্যক মাগধসেনার রক্তে রঞ্জিত করিতে হইবে, স্মরণ রাখিও । রক্তস্রোত বহুদিন প্রবাহিত হইবে, বন্ধগণ বিচলিত হইও না । অদ্য সুরার স্রোত প্রবাহিত তইতেছে, কলা রক্তস্রোত প্রবাহিত হইবে । বৃদ্ধের ধমনীতে যে ক্ষীণ শোণিত-স্রোত এখন প্রবাহিত হইতেছে, তাহ সমুদ্রগুপ্তের পৌত্রের সেবার ব্যয় হইবে, কিন্তু সেই আরম্ভ । অগ্নিগুপ্তের পরে গোবিন্দগুপ্ত— স্কন্দগুপ্ত থাকিবে; আর্য্যাবৰ্ত্তে নায়কের অভাব হইবে না । যতদিন – দেবতা ও রাহ্মণের সেবায় মাতা স্বেচ্ছায় পুত্ৰবলি দিবে, বনিতা সহাস্ত্যবদনে কান্তকে মৃত্যুমুখে প্রেরণ করিবে, দেবতা ও ব্রাহ্মণ, রমণী ও শিশু রক্ষার জন্য বৃদ্ধ কম্পিত হস্তে অসিধারণ করিবে, ততদিন আর্য্যাবৰ্ত্ত রক্ষিত হুইবে । কিন্তু যেদিন গৃহবিবাদ সুচিত হইবে সেইদিন চন্দ্রগুপ্ত, বিন্দুসার ও অশোকের সাম্রাজ্যের দ্যায় গুপ্তসাম্রাজা শতধা বিভক্ত হইয়া যাইবে । পুষ্যমিত্র ধূলিমুষ্টির জন্ত স্বর্ণমুষ্টি পরিত্যাগ করিয়াছিল, সে কথা বিস্তৃত হইও না। গৃহবিবাদের জন্য চিরদিন আর্য্যাবৰ্ত্তের সর্বনাশ হইয়াছে, সে কথা বিস্তৃত হইও না। বন্ধুগণ, প্রার্থনা কর, আশীৰ্ব্বাদ কর, হ্ৰণযুদ্ধ জয় করিয়া সাম্রাজ্যের সেনা ঘেদিন পাটলিপুত্র নগরে প্রবেশ করিবে, সেদিন যেন গোবিন্দগুপ্ত ও স্কন্দ গুপ্ত বিজয়যাত্রার পুরোভাগে যাত্রা করে। মধু স্বদন যদি সদয় হন তাহ হইলে সে বিজয়যাত্র তোমরা দেখিবে, তখন অগ্নিগুপ্ত থাকিবে না ! তোমরা দেখিও, তাহা হইলে স্বর্গে বা নরকে আমি তৃপ্ত হইব ।” সেনাপতি স্তব্ধ হইলেন। কেহ উত্তর দিল না, কেহ জয়ধ্বনি করিল না, সেনানীগণ নিশ্চল পাষাণ-প্রতিমার দ্যায় দাড়াইয়া রহিলেন । তখন একে একে শতাধিক পুরুষ কক্ষান্তর হইতে আসিয়া অগ্নিগুপ্তকে অভিবাদন করিল এবং কহিল, “প্রভু, আমরা পাটলিপুত্রবাসী, আমরা সাম্রাজ্যরক্ষার
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১২৬
অবয়ব