পাতা:কলিকাতার ইতিহাস.djvu/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৮
কলিকাতার ইতিহাস।

ফলপ্রদ বলিয়া বিবেচিত হইয়া থাকে। কলেরা যৎকালে ব্যাপক আকারে মার্কুইস অব হেষ্টিংসের বিপুল সেনাদলে প্রথম প্রকাশ পায়, সে সময়ে দেশীয় লোকেরাই প্রথম অক্রান্ত হইয়াছিল; ইউরোপীয় রোগীদিগের প্রবল আক্ষেপ (খেঁচুনি) ও দুর্নিবার পিপাসা হইত, কিন্তু ডাক্তারেরা তাহাদিগকে এক বিন্দুও জল খাইতে দিতেন না,অথচ যাহারা গোপনে জল খাইতে পাইত, তাহারা শীঘ্র শীঘ্র সারিয়া উঠিত। ব্র্যণ্ডি ও ডেনম ভিন্ন অন্যান্য চিকিৎসার মধ্যে রোগীকে গরম জলের মধ্যে আকণ্ঠ মগ্ন করিয়া তাহার বহু হইতে রক্ত মোক্ষণ করা হইত,—তবে কথা এই যে, যদি রক্ত বাহির হইত তাহা হইলেই ঐরূপ করা হইত। ডাক্তারের এই রোগের বীজ বায়ুতে থাকে বলিয়া মনে করিতেন, এবং প্রথম প্রথম ইহাকে স্পর্শ সংক্রামক কাজ বলিয়ও বিবেচনা করা হইত; শিবিরানুচরেরা এত শীঘ মারা পড়িয়াছিল যে, মার্কুইস অব হেষ্টিংস গোয়ালিয়রের নিকট স্থায়ী শিবির সন্নিবিষ্ট করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন।

 তৎকালে আমাশয়ের চিকিৎসা কিরূপ হইত, তাহা স্বর্গীয় ডাক্তার গুডিভ সাহেবে। লিখিত 'প্রাচ্য ভূখণ্ডে ইউরোপীয় চিকিৎসার প্রসার' বিষয়ক একটি প্রবন্ধ হইতে জানিতে পারা যায়। তিনি বলিয়াছেন—“আমাশয় রোগীর বল রক্ষা করা অবশ্যকর্তব্য এই বিবেচনায় মদ ও সসার মাংসমদ খাদ্য অতীব উপযুক্ত পথ্যরূপে ব্যবহৃত হইত। এই সকল স্থলে রোগীকে ইচ্ছানুসারে পোলাও, কালিয়া মুরগীর কাবাব ও গোলমরিচযুক্ত ‘চিকেনব্রথ’ (কুকুট শিশুর মুস), এবং তাহার সহিত দুই এক গেলাস ঔষধ বা কিঞ্চিৎ ব্র্যাণ্ডি ও জল এবং প্রচুর পাকা ফল