পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৪১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কলিকাতা সেকালের ও একালের । "שף9 ভাণ্ডার, রাজ্যের শ্রেষ্ঠ সম্পদ কোহিনুর, সবই ত পড়িয়া রছিল—তার একটাও ত তিনি সঙ্গে লইতে পারিলেন না। কোথায় অসংখ্য আলোকস্বাশি উজ্জ্বলিত আগ্রার রত্নময় প্রাসাদ—আর সেই মুখ বিলাসপূর্ণ আগব হইতে, কতদূরে তিনি আত্মীয় বান্ধবহীন হইয়া এই দাক্ষিণাত্যে। উহার দীর্ঘকালব্যাপী রাজত্বের অধিকাংশ সময়ই যে তঁাহাকে সুদূরদেশে যুদ্ধক্ষেত্রে কণটাইতে হইয়াছে ! মৃত্যুর পূৰ্ব্বে দারুণ নিৰ্ব্বেদ আসিয়া, সম্রাট ঔরঙ্গজেবের চিত্তাধিকার করিল। তিনি মনে মনে ভাবিলেন, এত চেষ্টা করিয়া, এতদিন ধরিয়া, যাহা করিয়াছি সবই ভুল ! জীবনে যে কঠোর পাপ করিয়াছি, তাহার প্রায়শ্চিত্তের সময় উপস্থিত । এই সব চিন্তায়, দারুণ মনোবেদনায় অধীর হইয় সম্রাট দিন রাত ভীষণ যাতনা ভোগ করিতেন । র্তাহার জীবনের সন্ধ্যায় যে পত্রগুলি তিনি তাহার পুত্রদের লিখিয়াছিলেন—তাহাতেই তাহার মনের অবস্থার প্রকৃত চিত্র পাওয়া যায়। একখানি পত্রে সম্রাট লিখিতেছেন—“যখন সংসারের প্রথমী আলোক দর্শন করিয়াছিলাম, তখন অনেকেই আমার পার্শ্বে ছিল। কিন্তু এখন আমি একাই চলিলাম। আমি কে—কেন পৃথিবীতে আসিয়াছিলাম, কিছুই ত বুঝিতে পারিতেছি না। রাজ্য, রাজকাৰ্য্য, যুদ্ধ লইয়াই জীবন কাটাইয়াছি। স্বার্থের চিন্তাতে বিভোয় হইয়া, জীবনের পথে অন্ধের মত চলিয়া আসিয়াছি। আত্মচিন্তায় সৰ্ব্বস্ব অর্পণ করিয়া, খোদাকে ভুলিয়াছি। এ জীবনে আমি কিছুই করিতে পারিলাম না। যে দেশ আমার শাসনাধীনে ছিল—যে প্রজ আমার আশ্রয়াধীনে ছিল, তাহীদেরই বা কি করিরছি ? ঈশ্বর ত আমার প্রাণের মধ্যেই বিরাজিত ছিলেন–কিন্তু আমার অন্ধ চক্ষু তাহা ত দেখে নাই। দেখিবার চেষ্টাও করে নাই। এ জগতে কিছুই সঙ্গে করিয়া আনি নাই—কিন্তু যাইবার সময় পাপের বিরাট বোঝা লইয়া চলিলাম। যদিও আমি সেই সৰ্ব্বশক্তিমান ঈশ্বরের করুণায় একান্ত বিশ্বাস করি, তাহা হইলেও ধে जभख পাপ করিয়াছি, তাহা ভাবিতে ভয় হয় । আমার কোন আশাই নাই। যাহাঁই ঘটুক না কেন, আমি জীবনতর মহাসমুদ্রে ভাসাইলাম। বিদায়—বিদায়—বিদায় ।”* . . . ধু ঠ। মার্চ ১৭৩s_খ্রষ্টাব্দের_প্রভাতে, ঈশ্বরের নিকট_প্রার্থনাস্তে-সম্ৰাট ঔরঙ্গজেবের প্রাণবায়ু দেহমুক্ত হইল। ঔরঙ্গজেব প্রায়ই বলিতেন—“খোদা

  • Scott's Deccan Vol II. p. IV, ( 1 794. )