পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৬১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫৭৬ কলিকাতা সেকালের ও একালের । হয়। ক্লাইভ ও ওয়াটসনের বীরকীৰ্ত্তিতে সমগ্র বঙ্গদেশ মুখরিত হইয়া উঠে। দেশের লোকে জানিতে পারে, ইংরাজ জাতি এতদিন বাণিজ্য করিয়াই আসিয়াছেন, কিন্তু সমরনীতিতেও তাহারা অদ্বিতীয়। অনেক দূরদর্শী অভিজ্ঞ লোকে বুঝিল—“ক্লাইভ ও ওয়াটসনের বাহুবলে বঙ্গদেশে ইংরাজ-রাজ্য প্রতিষ্ঠার সূচনা হইয়াছে। একদিন সমগ্র বঙ্গদেশ ইংরাজেরই হইবে।” ফরাণী, ডচ প্রভৃতি ব্যবসায়ী বণিকগণ, এই সময় হইতে লোকের চক্ষে অতি হীনশক্তি বলিয়া প্রতীয়মান হইলেন । লোকে বুঝিল—ইংরাজের কলিকাতা, এখন বিপদে আপদে তাহীদের আশ্রয়কেন্দ্র হইল। কলিকতা আক্রমণের সময়, যে সমস্ত লোক সহর ছাড়িয়া পলায়ন করিয়াছিল, তাহারা পুনরায় সহরে ফিরিয়া আসিতে লাগিল । শ্ৰীহীন শ্মশানবৎ কলিকাতা, পলাশী-যুদ্ধের পর হইতেই আবার ধীরে ধীরে নবন্ত্র সম্পন্ন হইয়া উঠিতে লাগিল। সমগ্র বঙ্গদেশ-—বঙ্গদেশ কেন—সমগ্র ভারতে, ইংরাজ জাতির শৌর্য্য-বীর্য্যের কথা, ক্রমে ক্রমে প্রচারিত হইতে লাগিল। দিল্লীর ক্ষমতাহীন বাদসাহের কর্ণেও ক্লাইভ ও ওয়াটুসন কর্তৃক কলিকাতা পুনরধিকার ও পলাশী-সমরের বিজয়বাৰ্ত্ত পৌছিল । ইংরাজজাতি বাহুবলে সমগ্র বঙ্গমধ্যে যে শক্তিসঞ্চয় করিলেন, এইবার তাহার ক্রিয়া আরম্ভ হইল। মীরজাফরের সহিত পূৰ্ব্ব সন্ধির স্বত্বানুসারে, ক্লাইভ—র্তাহাকে মসনদে প্রতিষ্ঠিত করিলেন । কলিকাতা লুণ্ঠনের সময়, নবাব সিরাজউদ্দৌলা কর্তৃক কোম্পানীর প্রজাবর্গের যে ক্ষতি হইয়াছিল, তাহার পূরণার্থে নবাব মীরজাফর ক্রোরাধিক মুদ্রা প্রদান করিলেন। এ মুদ্রা কলিকাতার অধিবাসীদের মধ্যে কিরূপ ভাবে বিতরিত হইয়াছিল, তাহার তালিকা পাঠক পূর্বেই দেখিয়াছেন। সিরাজ কলিকাতার নাম আলিনগর রাখিয়াছিলেন। ক্লাইভ কলিকাতা উদ্ধারের ও পলাশীসমরের পর, তাহা পুনরায় কলিকাতায় পরিবর্তিত করেন । * * ~. স্থানে, ঠিক সেইরূপ একটী স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করিয়াছেন । বর্তমান রাইটাস বিলডিংএর যে কোণে সেকালের সেন্টএন গির্জা ছিল, তাহার সান্নিধ্যেই এই স্মৃতিস্তম্ভ অবস্থিত। লর্ড কর্জন বহু চেষ্টার পর, ব্লাকহোলের স্থান নিৰ্দ্ধারণ করিয়া সেই অন্ধকূপবৎ কারাগৃহের অধিকৃত ভূমির একাংশ কৃষ্ণপ্রস্তর মণ্ডিত করিয়া দিয়াছেন। আমরা এই পুস্তকে ব্লাকহোল স্মৃতিচিহ্ন দুইটার ছবি দিলাম।

  • এখনও এই আলিনগর নামের অপভ্রংশ ‘আলিপুর" এর অস্তিত্ব রহিয়াছে। নবাব মীরজাফর আলি এইস্থানে এক প্রাসাদ নিৰ্ম্মাণ করিয়া বসবাস করেন। আজকাল