পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/৬২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&bro কলিকাতা সেকালের ও একালের । “গৃহসজ্জার মধ্যে চেয়ার, টেবিল ও আলমারী প্রভৃতির সংখ্যা বড় কম। এদেশে এ সকল জিনিস প্রস্তুত হয় না। ক্যাবিনেটের অর্থাৎ কাঠ-কাঠরার কোন দোকানও কলিকাতায় নাই। ঘরের মেঝেগুলির উপর ম্যাটিং করা হয়। ঘরের জানালাগুলি বেত্ৰনির্মিত। দুই চারিজন অবস্থাপন্ন লোকের আবাসগৃহে, গৃহভিত্তি বিলম্বিত দুই একখানি দর্পণ দেখিতে পাওয়া যায়। এ সকল দর্পণ ইউরোপ হইতে আনীত। এক একটা বাড়ীর মধ্যে কামরার সংখ্যা কম। কিন্তু কামরাগুলি খুব দীর্ঘ ও প্রশস্ত।” “টেবিল, চেয়ার ও আলমারি প্রভৃতি বড়ই দুষ্প্রাপ্য। যাহারা একটু অবস্থাপন্ন, তাহারা ইউরোপ হইতে কলিকাতায় আগত জাহাজের কাপ্তেনদের নিকট জিনিসপত্রাfদ খরিদ করিয়া থাকেন। কেহ বা চীনদেশ ও বোম্বাই সহর হইতে গৃহ-সজ্জার উপযুক্ত কাষ্ঠনিৰ্ম্মিত উপাদানগুলি সংগ্ৰহ করেন। এ দেশের মিস্ত্রীরা যাহা কিছু আসবাব নিৰ্ম্মাণ করে, তাহা অতি কদৰ্য্য। কলিকাতাবাসী ইংরাজদের মধ্যে র্যাহাদের অবস্থা ও ভাগ্য অপ্রসন্ন, তাহার এইরূপ চেয়ার আলমারীপূর্ণ গৃহ-সজ্জা করিয়া থাকেন।” কিণ্ডাসলীর উল্লিখিত বর্ণনা হইতে পাঠক পলাশীযুদ্ধের পরবর্তী সময়ের কলিকাতার অবস্থা জানিতে পরিবেন। কিণ্ডাস লীর বর্ণনা ব্যতীত অন্যান্য উপাদান হইতে নানাবিধ তথ্য সংগ্ৰহ করিয়া আমরা পাঠকবর্গের চিত্তরঞ্জন করিতেছি। ১৭৫৮ খৃঃ অব্দে লর্ড ক্লাইভের প্রস্তাবাহুসারে, কলিকাতায় নূতন কেল্লার নিৰ্ম্মাণ সূচনা হয় । ইহাই বৰ্ত্তমান গড়ের-মাঠের কেল্লা । ১৭৫৮ খ্ৰীঃ আবে ইহার নির্মাণ কাৰ্য্য আরম্ভ হইয়। ১৭৭৩ খ্ৰীঃ অব্দে শেষ হয়। প্রথমতঃ ভাগিরথী তীরেই এই নব সংকল্পিত কেল্লার বনিয়াদ গাড়িবার সংকল্প স্থির হয়। কিন্তু পরে সে প্রস্তাব পরিত্যক্ত হওয়ায়, গঙ্গাগর্ভের একটু দূরে গোবিন্দপুর গ্রামের অধিকৃত স্থানে ইহার নির্মাণ কাৰ্য্য আরম্ভ হয়। গোবিন্দপুর গ্রাম তখন বেশ জাকাইয়া উঠিয়াছে। - অনেক পদস্থ ঐশ্বৰ্য্যবান বাঙ্গালী, এখানে বসবাস করিতে আরম্ভ করিয়াছেন। গোবিন্দপুরের আশে পাশের জঙ্গলও অনেকটা পরিস্কৃত হইয়াছে। গোবিন্দপুরের পাশে কালীঘাটের পথ-পাশ্ববর্তী, চৌরঙ্গীর জঙ্গল তখনও পরিস্কৃত হয় নাই। ধৰ্ম্মতলার অর্থাৎ বৰ্ত্তমান এসপ্লানেডের অবস্থাও তখন অনেক উন্নত। গোবিন্দপুরে ঘুগনিৰ্ম্মাণ উপলক্ষে,এ স্থানের আদিম অধিবাসীদের অনেককেই গোবিন্দপুর ত্যাগ করিয়া উঠিয়া যাইতে হয় নবাব মীরজাফরের