পাতা:কল্পদ্রুম - দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৬০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ o ২ কল্পদ্রুম। যেনাক্ষরসমামায়মধিগম্য মহেশ্বরাৎ । কৃংঙ্গং ব্যাকরণং প্রোক্তং তস্মৈ পাণিনয়ে নমঃ । অতএব, শিক্ষাগ্রন্থখানি পাণিনিরচিত নহে, তাহা স্পষ্টই প্রতিপন্ন হইতেছে । - মহাভারতের প্রারম্ভে কৃষ্ণদ্বৈপায়নের নমস্কারবাক্য দেখিয়া প্রসিদ্ধ টীকাকার নীলকণ্ঠকেও শঙ্কিত হইতে হইয়াছে । তিনি ভয়ে ভয়ে এ কথার এই শৈলী করিয়াছেন যে, আপনার ব্রহ্মভাব জানিয়া লেখক “ কৃষ্ণদ্বৈপায়নায় নমঃ ” এই কথা লিখিয়াছেন এবং ইহার সঙ্গে সমঞ্জস্য রাখিবার নিমিত্ত, “ পিতামহীয় নমঃ ” এই অংশের অর্থ করিতেছেন যে, ব্যাসের পিতামহ বশিষ্ঠকে নমস্কার। এটা শৈলী ভিন্ন আর কিছুই নহে। ব্যাসের পিতাও একজন প্রসিদ্ধ ঋষি । ব্যাস পিতাকে প্রণাম না করিয়া এককালে পিতামহকে প্রণাম করিলেন, ইহার তাৎপর্য্য কি বলিতে পারি না । বস্তুতঃ, গ্রন্থকারের সে অভিপ্রায় নয়। “ পিতামহয় নমঃ ”। গ্রন্থকার ইছার দ্বারা লোক পিতামহ ব্ৰহ্মাকে প্রণাম করিয়াছেন। এই অর্থই সঙ্গত বোধ হয়। ব্যাস মূল সংহিতার রচ য়িতা, সে কারণ গ্রন্থকার ব্যাসকেও প্রণাম করিয়াছেন । আত্মাকে ব্ৰহ্ম ভাবে ব্যাস আপনাকে আপনি প্রণাম করিতেছেন, ইহা কখনই স্বসঙ্গত নহে । আবার মহাভারতের আর এক স্থলে দেখুন— মম্বাদি ভার তং কেচিদাস্তিকাদি তথা পরে । তথোপরিচরাদন্যে বিপ্রাঃ সমাগধীয়তে ॥ আদিপৰ্ব্ব ৫২ ৷ কাহারও মতে স্বস্তিবাচন হইতে,কাহার মতে আস্তিক উপাখ্যান হইতে, কাহারও মতে উপরিচর আখ্যান হইতে মহাভারত আরম্ভ হইয়াছে। সমগ্র মহাভারত ব্যাসের রচিত হইলে গ্রন্থারস্তু লইয়৷ মতভেদ কেন হয় ? কোন স্থল হইতে মহাভারত আরম্ভ হইয়াছে, ব্যাস স্বয়ং সে সন্দেহ ভঞ্জন করিয়া দিতে পারিতেন। র্তাহার বাক্য অলঙ্ঘ্য ও অভ্রান্ত হইত, তাহাতে কাহারও অশ্রদ্ধা জন্মিত না, মতভেদ ও হইত না । কিন্তু মহাভারতের সমস্ত ভাগ ব্যাসের গ্রথিত নয়, স্বতরাং মতভেদ ও ঘটয়াছে | বtহ হউক, মহাভারত একজনের রচিত নয়, তাহা স্পষ্ট প্রতিপন্ন হইল ।