পাতা:কাঙাল হরিনাথ - জলধর সেন.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Vo কাঙ্গাল হরিনাখ ৩। যে গলার মধুর স্বরে, জগতেরে মাতাস ওরে ঘাটেপড়া ; তখন তোর সেই স্বরেতে থেকে থেকে রব করিবে ঘড়াৎঘাড়া । ৪ । তাই বলি, যাই দেখি চল সত্যপথে নিতানগরেতে মোরা ; শুনেছি সেই ধামেতে এইরূপেতে । মরে না রে মানুষ যারা ।” । প্ৰফুল্লচন্দ্র এই গানটী রচনা করিলেন বটে, কিন্তু তিনি ইহাতে কোন ভণিতা দিলেন না । তিনি বলিলেন, “আমি আমার এ প্রথম গানে ভণিতা দিব না। এ গান আমার রচনা নহে ; আমার সাধ্য কি যে, আমি এ গান রচনা করি। যিনি আমার মুখ দিয়ে, আমার মত মহাপাপী ও দুশ্চরিত্রের মুখ দিয়ে এ গান বাহির ক’রে দিয়েছেন, তার যদি ইচ্ছা! হয়, তবে তিনি ভণিতা দিবেন।” তাই এ গানটীর কোন ভণিতা নাই ; কিন্তু তৃতীয় দিনে যখন এই গানটী লইয়া ফকিরের দল গ্রামে বাহির হইলেন, তখন এই গান শুনিয়া লোকে একেবারে অধীর হইয়া গেল । যে একবার শুনিল, সে দ্বিতীয়বার শুনিবার জন্য দলের পশ্চাতে পশ্চাতে চলিতে লাগিল। কাঙ্গালের কুটীর হইতে গানের দল বাহির হইয়া যখন বাজারে পৌছিল তখন লোকারণ্য ; দূর গ্রাম হইতে লোকেরা এই দলের গান শুনিবার জন্য বেল দ্বিপ্রহর হইতে আসিয়া অপেক্ষা করিয়া আছে। বাজারের উপর যখন এই গানটীর আগাগােড়া গীত হইল, তখন কাহারও চক্ষু শুষ্ক ছিল না ; সকলেরই প্ৰাণের মধ্যে এক অভূতপূৰ্ব্ব ভাবের সঞ্চার হইয়াছিল। আমি অনেক দিন এমন জন-সমারোহ দেখি নাই। আর বলিতে কি, এমন প্ৰাণস্পৰ্শী গানও আমি কখনও শুনি নাই। এখনও আমার নয়নসম্মুখে সেই দৃশ্য বৰ্ত্তমান দেখিতেছি। সে আজকালকার কথা নহে। ফিকিরর্চাদ ফকিরের দল বাঙ্গালা ১২৮৭ সালে প্ৰথম গঠিত