পাতা:কাঙ্গাল হরিনাথ (দ্বিতীয় খণ্ড) - জলধর সেন.pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পর পূজা। উপাসনা শব্দের অর্থ কি ? সোজাসুজি বলিতে গেলে উপাসনা শব্দের অর্থ নিকটে উপবেশন। বিশুদ্ধ ভক্তির প্রভাবে ভগবানকে দর্শন এবং এই তিনি আমার নিকট বসিয়া আছেন, ইহার স্পষ্ট অনুভূতিই উপাসনা । উপাসনা সকলেরই এক প্রকার। ইহাতে মতভেদ বা মতদ্বৈধা নাই এবং আমার মনে হয়, থাকিতেও পারে না। আমার পিতা, আমার দেবতা, আমার আরাধ্য ধন আমার নিকট উপস্থিত হইয়াছেন, আমার সম্মুখে আসন গ্ৰহণ করিয়াছেন, আমি তঁহাকে দর্শন করিয়া বা তঁহার সান্নিধ্য উপলব্ধি করিয়া, তাহার নিকট বসিয়া আছি- ইহাতে আমার এক মত এবং অপরের অন্য মত হইবার কোন কারণ নাই। এ জগতে যাহারা ভগবানের নিকটে বসেন, তাহদের সকলেরই অবস্থা একরূপ। তবে এ কথা ঠিক যে, সকলের উপাসনার প্রণালী একরূপ নহে—নানা জনের নানারূপ। আর এই নানারূপ প্ৰণালী হইতেই জগতে নানা সম্প্রদায়ের সৃষ্টি বা আবির্ভাব। তাহাতে যায় আসে না । নদনদী যেমন নানা দিক দিয়া প্ৰবাহিত হইয়া পরিশেষে সাগরে প্রবেশ করে, উপাসনাপ্ৰণালীও সেই প্ৰকার ভগবানরূপ অমৃত-সাগরেই প্ৰবেশ করিয়া থাকে। নদনদীর মুখ বদ্ধ হইলে যেমন জল সাগরে পতিত হয় না, নানা স্থানে আবদ্ধ হইয়া দুষ্ট হইয়া যায়, সেইরূপ উপাসনা-প্ৰণালী উপাসনা-সাগরে পতিত না হইলে তাহার কাৰ্য্যও দুষ্ট হইয়া থাকে। দুষ্ট জল যেমন মনুষ্য জীবনের অপকারী, উপাসনা-প্ৰণালীর দুষ্ট কাৰ্য্যাদিও লোকের পক্ষে তেমনই অনিষ্টকর হইয়া থাকে। পৃথিবীর সকল নদনদীর জল যেমন একই প্ৰণালীতে বহাইয়া সাগরে লইয়া যাওয়া অসম্ভব, তেমনই সমস্ত উপাসনাপ্ৰণালী এক করিয়া সেই ভূম মহাসাগরে প্রবাহিত করাও অসম্ভব। পৃথিবীর ইতিহাস পাঠ করিলে দেখা যায় যে, ইহা কখনও କର (t