পাতা:কাঙ্গাল হরিনাথ (দ্বিতীয় খণ্ড) - জলধর সেন.pdf/১০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কোথায়ও হয় নাই, হইতে পারে না। প্ৰণালীগুলির জল সাগরে মিশিতেছে কি না, তাহারই আলোচনা করা, এবং প্রণালীর মুখ বদ্ধ হইলে তাহা পরিষ্কার করিবার উপায় উদ্ভাবন করা মনুষের সাধ্য, সুতরাং কৰ্ত্তব্য । কাঙ্গাল হরিনাথ বলেন “কেহ উচ্চতল মন্দিরে, কেহ গৃহে, কেহ গুহায়, কেহ পৰ্ব্বতে, কেহ বনজঙ্গলে, কেহ বা নদীতীরে ও বৃক্ষতলে উপাসনা করিয়া থাকেন। কেহ সিংহাসনে বা কাষ্ঠাসনে, কেহ কুশাসনে উপবেশন পূর্বক, কেহ গালিচা দুলিচা মাদুর বিছাইয়া, কেহ মৃত্তিকায় বসিয়া, কেহ যোগাসনে, নানাসনে, কেহ স্বেচ্ছাসনে, কেহ দুইপদে, কেহ এক পদে দণ্ডায়মান হইয়া, কেহ জানু পাতিয়া বসিয়া, কেহ উৰ্দ্ধ হস্তে, কেহ মুদ্রিত নেত্ৰে, কেহ মননে, কেহ বচনে, কেহ বা অন্য প্রকারে উপাসনা করিয়া থাকেন। এ সকল প্ৰণালী, ইহা উপাসনা নহে। উপাসনা র্তাহার সমীপে উপবেশন করা। যিনি তাহা করিয়া থাকেন, তিনি যে প্ৰণালী অবলম্বন করুন না কেন, কৃতাৰ্থ হইয়াছেন। যিনি তাহা করিতে পারেন নাই, তাহার নানাবাদ্যসমন্বিত ও দীপালোকে আলোকিত মন্দির, শৈবশাক্ত সন্ন্যাসীর বেলতলা, বৈষ্ণবের তুলসীতলা, ফকিরের আস্তান ও দরগাতলা প্ৰভৃতি সকলেরই এক দশা। এটা কিছু নহে, ওটার প্রয়োজন নাই, সেটা নিরর্থক, এই সকল বাহিরের কথায় পরস্পর বিবাদ করিয়া ঈশ্বর ও ধৰ্ম্মের নামে দলবদ্ধ করা জ্ঞানী মনুষ্যের পক্ষে অনুদারতা । যে প্ৰণালী অবলম্বন করিয়া যিনি উপাসনা করিতে পারেন। অর্থাৎ ভগবানের সমীপে বসিতে সমর্থ হয়েন, তাহার পক্ষে সেই প্ৰণালীই অমৃত। আর যিনি তাহা না পারেন, তাহার পক্ষে সকল প্ৰণালীই মৃত । সোজা কথা এই যে, চিত্ত স্থির করিতে হইবে ! কি উপায়ে যে কাহার চিত্ত স্থির হয়, তাহার যখন কোন নির্দিষ্ট পথ নাই, তখন আমার প্রণালী ର୯୬