পাতা:কাঙ্গাল হরিনাথ (দ্বিতীয় খণ্ড) - জলধর সেন.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰকাশের নাম গুণ। গুণের দ্বারা যাহা উৎপন্ন হয়, তাহারই নাম কৰ্ম্ম । অতএব এই অসীম জগৎ কেবল কৰ্ম্মেরই ব্যাপার। এই কৰ্ম্মের কৰ্ত্তা ভগবান এবং জীব। ইচ্ছাপ্রকাশ হইতে প্ৰকৃতি পৰ্যন্ত অর্থাৎ ব্ৰহ্মার উৎপত্তি অবধি ভগবান স্বয়ং কৰ্ত্তা ; তাহার পর হইতেই জীবের কর্তৃত্ব। এই কর্তৃত্বের নামই স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতার উপরে ভগবানের কোন কর্তৃত্ব নাই, তাহা নহে। অগ্ৰে জীবের ইচ্ছাপ্রকাশ, পরে তৎসঙ্গে ভগবৎশক্তির যোগ হইয়া থাকে। ইচ্ছাপ্রকাশে জীবের সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব আছে। এই নিমিত্ত জীব কৰ্ম্মের ফল ভোগ করিয়া থাকে। অন্যথা জীব কৰ্ম্মফলভোগী হইত না। ভগবানের কি অদ্ভুত মায়াশক্তি ! এই মায়াশক্তিতে জীব অন্ধ হইয়া সদসৎ কাৰ্য্য করিয়া আপনাকে সুখী ও দুঃখী মনে করিতেছে। এই মায়া ভেদ করিতে পারিলে জীব সুখদুঃখের অতীত হইয়া কেবল ব্ৰহ্মানন্দ অনুভব করিতে থাকে। অতএব, মায়াই ভগবানের লীলা এবং জীবের কৰ্ম্মোৎপত্তির হেতু। নতুবা তঁহার এই ব্ৰহ্মাণ্ডলীলার প্রকাশ হইত না । “ভগবানের প্রথম কৰ্ম্ম সদসদাত্মিক শক্তির প্রকাশ । দ্বিতীয় কৰ্ম্ম, তাহাতে কালশক্তির যোগ। তৃতীয় কৰ্ম্ম, উভয় যুক্ত শক্তিতে চৈতন্যশক্তির প্রবেশ। চতুর্থ কৰ্ম্ম, ঐ চৈতন্যশক্তিতে পূৰ্ণচৈতন্যশক্তির প্ৰভাদান। সূৰ্য্যরশ্মি যেমন চন্দ্ৰে পতিত হইয়া চন্দ্ৰকে আলোকিত করে, এই প্ৰভাদানও তদ্রুপ। জীবচৈতন্যে পুর্ণচৈতন্যের ব্ৰহ্মজ্যোতিঃ পতিত হইলে চন্দ্রের ন্যায় জীবও ক্ৰমান্বয়ে আলোকিত হইয়া পূর্ণ চন্দ্রের ন্যায় পূর্ণ হয় ; এবং চন্দ্র যেমন অন্ধকারচ্যুত হয়, জীবও তদ্রুপ মায়াজন্য কৰ্ম্মচ্যুত হইয়া বিশুদ্ধাবস্থা প্রাপ্ত হইয়া ব্ৰহ্মানন্দ ভোগ করে। চন্দ্ৰ যে ক্রমে জ্যোতিষ্মান এবং ক্ষয়প্রাপ্ত হইয়া জ্যোতিশূন্য হয়, তাহার কারণ যেমন একমাত্র সুৰ্য্যেরই জ্যোতিঃ ; তদ্রুপ জীব যে পুণ্যপথে v$9ዓ