কাদম্বরী চতুর্থ সংস্করণে মূদ্রিত এই দুইখানি বিজ্ঞাপন পাঠ করিলে মনে হয়, তৃতীয় ও চতুর্গ বার গ্রন্থ প্রকাশ করিবার সময়ে তিনি গ্রন্থের লিখিত বিষয়ে বিশেষ কোনও পরিবর্তন করেন নাই, নতুবা সেই পরিবর্তনের বিষয় সেই সেই বারের বিজ্ঞাপনে লিখিত হইয়া মুদ্রিত করিবার প্রয়োজন হইত। সুতরাং এই চতুর্থ সংস্করণটিই যে গ্রন্থকারের জীবদ্দশায় প্রকাশিত শেষ-প্রামাণিক (authentic) | ও বিশুদ্ধ সংস্করণ, তাহাতে সন্দেহের লেশ মাত্র নাই। ইহার পরের কয়েকখানি সংস্করণ পড়িয়াছি, সেগুলি বিভিন্ন সম্পাদক-পুঙ্গবগণের হক-না-হক ওস্তাদিতে ও পণ্ডিতষ্মন্তত্বে ‘সাত নকলে আসল খাস্তা’ হইয়াছে। যাহার যেমন ইচ্ছা হইয়াছে তিনি সেই ভাবে প্রাণ ভরিয়া কাটিয়া, ছাটিয়া, বাড়াইয়া, বাদ দিয়া,—ভমক্রমে ‘কপিছাড়’ করিয়া, বিশুদ্ধ শব্দের প্রয়োগ ও অর্থ সম্যক্ বুঝিতে ন! পারিয়া অশুদ্ধ- ও অপ-প্রয়োগের অযথা অবতারণা করিয়া, খোদার উপর খোদকারি করিতে গিয়া পদে পদে তারাশঙ্করকে বিড়ম্বিত করিয়া তাহার মুগুপাত করিয়াছেন এবং স্ব স্ব ওস্তাদি জাহির করিয়াছেন । এইরূপ বিচিত্র ও শোচনীয় পরিণাম যে শুধু কাদম্বরীর ভাগ্যেই ঘটিয়াছে, তাহা নহে,—বাঙ্গালার অনেক সদগ্রন্থই গ্রন্থকারের অবর্তমানে সুযোগ্য সম্পাদকের হস্তে এইভাবে বিড়ম্বিত, নিৰ্য্যাতিত ও নিগৃহীত হইয়াছে। দুঃখ হয় না কি ? বলা বাহুল্য, এই সকল কারণেই কাদম্বরীর চতুর্থ সংস্করণখানিই অবলম্বন করিয়া এই পুনমুদ্রণ ।
পাতা:কাদম্বরী (চতুর্থ সংস্করণ).djvu/২১
অবয়ব