পাতা:কাব্যের কথা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রূপান্তরের কথা SS আপনার বিকাশ আপনি আপনিই করে। তাই সেই প্ৰদীপ হাতে করিয়া ঘরে ঘরে প্রাণের দুয়ারে দুয়ারে সেই নিভান দীপগুলি জ্বালাইয়া দিতে চাই। আমি কানে যে সুর শুনিতেছি, সে সুর আমার দেশবাসীকে আমি শুনাইতে চাই। যে প্ৰদীপে আমার প্রাণ জলিয়াছে, সে প্ৰদীপ আমার বাঙ্গলার ঘরে ঘরে জ্বালাইতে চাই। বাঙ্গলা আপনার আত্মবিকাশ আপনি করিবে, আপনার গান আপনি গাইবে, আপন সাধন দ্বারা সেই সিদ্ধি লাভ করিবে ও আপন গৌরবে জগতের সম্মুখে দাড়াইবে । আমিই দেখিব, আমাদের ঘরে ঘরে সেই প্ৰদীপ জ্বলিতেছে ; আমরাই শুনিব, সেই বঁাশারী কত বিচিত্র রাগিণীতে বাজিতেছে। তোমার প্রাণের উজ্জ্বল ধ্রুবতারাকে লক্ষ্য করিয়া চল, দেখিবে, তোমারই আকর্ষণে বিশ্বব্ৰহ্মাণ্ড ঘুরিতেছে ; দেখিবে, তোমারই আলোকে চন্দ্ৰ-সূৰ্য্য আলোকিত হইতেছে। চাই শুধু-প্ৰাণের আন্তরিকতা, চাই শুধু— জীবনকে মৰ্ম্মে মৰ্ম্মে উপলদ্ধি করা, চাই শুধু-আত্মার দীপ হাতে করিয়া প্ৰতি পদক্ষেপ গণনা করিতে করিতে পথ চলা ! আমি শুনিয়াছি, আমার কথাগুলি নাকি অনেকে বুঝিতেই পারেন নাই । আজ আমি সেই কথাগুলি আরও ভাল করিয়া বুঝাইতে চেষ্টা। " করিব। আমার বাঙ্গল কেমন করিয়া সুখে দুঃখে সোহাগ-আবেগে নিত্য নূতন হইয়াছে, বিচিত্র হইয়াছে, রসের সঙ্গে রসের মিলন ও বিরোধে কেমন করিয়া মরা বাঙ্গালী গান গাইয়াছে, তান তুলিয়াছে, সেই গানের কতটা খাট, কতটা মেকি, তাহারই কথা বলিয়াছিলাম। চণ্ডীদাস হইতে আরম্ভ করিয়া বাঙ্গলার গীতিকবিতার ধারা কেমন করিয়া বহিয়াছিল, মহাপ্রভুর জীবনের মধ্যে কেমন করিয়া, তাহার অপুৰ্ব্ব বেগ ও ক্ষুণ্ঠি হইয়াছিল, কেমন করিয়া আবার সেই ধারা, মহাপ্রভুর পরবর্তী বৈষ্ণব কবিদিগের কবিতায় কি আকার ধারণ করিয়াছিল, আবার