পাতা:কাব্যের কথা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

वांछ व्लांद्ध कीडिकविड V তিনের সাধ্যভাব এক সঙ্গে সমন্বয় করিতে কেহ পারেন, সে মূৰ্ত্তি জগতে আজিও সৃষ্টি হয় নাই, কল্প-কলার সে রূপান্তরের জন্য বাঙ্গল উদগ্রীব হইয়া রহিয়াছে। বিদ্যাপতির রূপ-বিলাস, চণ্ডিীদাসের প্রাণের গভীরতা, আর কৃষ্ণকমলের “স্বাদিতে নিজ মাধুরীতে” যে বিরহ, এই তিনের অপূর্ব রস-রচনা, কোন দেশের সাহিত্যেই আজও পৰ্য্যন্ত সৃষ্ট হয় নাই । বাঙ্গলার মাটীতেই সেই তিন ফুটিয়াছে, আবার বাঙ্গলার মাটীতে কি একে-সেই তিন ফুটিবে না। শ্ৰীচৈতন্য-মহাপ্রভুর যে রাধা-ভাব, সেই জীবন্ত রাধা-ভাবের ছাপ কৃষ্ণকমলের রাই উন্মদিনীর রাধিকায় ফুটিয়াছে। ভাগবতের উক্তি চৈতন্যের প্ৰেমাশ্রিত্নতে ধৌত করিয়া কৃষ্ণকমল রাধিক গড়িয়াছিলেন। শ্ৰীচৈতন্য-চরিতামৃতের অমৃত-রস ছকিয়া কৃষ্ণকমল রাই উন্মদিনীকে বসাইয়াছিলেন। কৃষ্ণকমলের রাধায় যে আত্মবিস্মৃতি, সেই আত্মবিস্মৃতিতে রাধার বিরহ জাগিয়াছে। শ্ৰীচৈতন্যেও তাই ! রাধিক হইয়া বাহ প্ৰকৃতির রূপে রূপে কৃষ্ণ দেখিতেছেন। পূর্বে ষে কবিতাটি উদ্ধৃত করিয়াছি, তাহা যেন রাধা। আত্মবিশ্বত হইয়া বধু পাইবার জন্য তাহার সে তপস্যার কথা কহিতেছেন। কৃষ্ণকমলের রাধিক এক অভিনব সৃষ্টি । বাঙ্গলার মধ্যযুগে “গানের যুগে’ এই বিচিত্ৰ ভাব-সম্পদের কথা আমি এই-খানেই শেষ করিলাম। তারপর অন্ধঘন মসীময় আকাশ,- আর নাই। বাঙ্গলায় প্রতীচ্যের নব আগমনে, তাহার আলোকে, তাহার বুকের সলিত শুখাইয়া গেল, বাঙ্গলার দীপ নিভিয়া আসিল । বাঙ্গল চিরদিন পূর্বদিকেই সূৰ্য্য উঠতে দেখিয়াছে, অকস্মাৎ পশ্চিম আকাশে বিজলী-ঝলকের মত আলোক দেখিয়া তাহার নয়নে ধাধা। লাগিল, বাঙ্গলা একেবারে মুহ্যমান হইয়া পড়িল । তাহার প্রাণের ভিতরে যে প্ৰাণ ছিল, সে তখন তাহার প্রাণপুট বন্ধ করিয়া দিল ।