পাতা:কাব্যের কথা - চিত্তরঞ্জন দাশ.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঙ্গলার গীতিকবিতা brŠ বুদবুদ, যিনি প্রতিরূপেই স্বপ্ৰকাশ, তিনিই এই বিশ্বের আদর্শ। তিনিই সুন্দর, তিনিই কল্যাণ, তাহার সৃষ্ট, অনন্ত রূপই সুন্দর এবং সব স্বষ্টিই সেই জন্য সুন্দর। যেখানেই তঁহার সুন্দর রূপের প্রকাশ হয়, সেখানেই উজ্জ্বল বিভার আলোকচ্ছটায় সৌন্দৰ্য্য শতগুণেই ফুটিয়া উঠে। স্বপ্ৰকাশ স্বাধীন আত্মার যে অনুভূতি ও সৃষ্টি, তাহাই কল্পকলার রূপস্থষ্টি। আর যে রূপের অনুভূতির আদর্শ ও রূপে অঙ্গাঙ্গিভাবে পুর্ণ সরস হইয়া ফুটিয়া উঠে, তাহাই শ্রেষ্ঠ রূপান্তর। সেই মুহূৰ্ত্তেই আমরা চিদানন্দ-ঘন-রাসের ক্ষুৰ্ত্তি যে স্বরূপে প্ৰতিষ্ঠিত, তাহাই অনুভব করিতে পারি। সৌন্দৰ্য্য সেই জন্য সকল রকমের স্বাধীনতার উপরই ফুটে । জীবনের সাধনার ধারায় যখন মন প্ৰাণ দেহের সর্ববাধ-বন্ধনবিহীন ভাবে আবেগে আনন্তের দিকে মুখ তুলিয়া চায়। প্ৰাণের ভিতর সেই অনুভূতি যখন দেহ-মন-প্ৰাণে একাঙ্গীভূত হয়, তখনই জীবনের রূপান্তর। এ রূপান্তর বুদ্ধের জীবনে হইয়াছিল, যখন বুদ্ধ মহাতপস্যার পর গেহকারককে নিজের ভিতরেই চিনিতে পারিলেন । এই রূপান্তর-চণ্ডিদাসের জীবনে হইয়াছিল, যখন তিনি তিমির-অন্ধকার পার হইয়া সহজকে জানিলেন, যখন প্ৰাণের অনুভূতির কষ্টি-গাথরে, ‘বিষামূতের” একত্রে মিলন-রেখা, মরমের দাগে সোনার নিকষের মত দাগ দিল । রূপান্তর মহাপ্রভুর জীবনে হইয়াছিল, যখন সব ঠাইয়ে র্তাহার কৃষ্ণ-স্ফারণ হইতে লাগিল। এই রূপান্তর রামপ্ৰসাদের হইয়াছিল, যখন তিনি সত্য জগন্মাতাকে রূপের লীলায় প্ৰত্যক্ষ দেখিতেন, ' অবোধ বালকের মত মায়ের নিকট আবদার করিতেন, কখনও বা তাহাকে গালি দিতেন। এই রূপান্তর শ্ৰীৱামকৃষ্ণে ও ফুটিয়াছিল। রামপ্রসাদের সাধনা রামকৃষ্ণের ভিতর যেন জীবন্ত রসমূৰ্ত্তিতে মূৰ্ত্ত হইয়া ফুটিয়া উঠিয়াছিল। এই যে মানুষের জীবনের ধারায় সাধনাঙ্গের একটা