পাতা:কালিদাস - রাজেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SV)3 কালিদাস । তৃপ্তি জন্মে, তবে তাহারও আধিপত্য চিরদিন হৃদয়ে অক্ষুন্ন থাকে। চিরদিন তাহা মনে পড়ে। সেই জন্যই কবিগণ লোক শিক্ষোপযোগী আদর্শগুলিকে সৌন্দৰ্য্য-রূপ হৃদয়-রঞ্জন কাঞ্চকে আবৃত করিয়া জগতে শিক্ষার প্রচার করেন। ধীরতা এবং সত্যপ্রিয়তার ন্যায় গুণ নাই, তুমি ধীর হও, সত্য-প্রিয় হও—এই সার কথা মহাভারতের ভীষ্ম এবং যুধিষ্ঠিরের সৃষ্টিতে কীৰ্ত্তিত হইয়াছে। মহাভারতের কবি, ঐ দুইটি চরিত্র চিত্ৰণ দ্বারা এই সার কথা যে রূপ প্ৰাঞ্জল-ভাবে বুঝাইয়াছেন। শত শত বাগ্মী, তারস্বরে, সহস্ৰ বৎসর যাবৎ বক্তৃতা করিয়াও তঁহাদের শোতৃবৃন্দকে সেইরূপ সুন্দর, সুপরিস্ফুটভাবে বুঝাইতে পারিতেন না, রাজার শাসনে যে কাজ না হয়, কবির সৃষ্টি-কৌশলে তাহা হইতে পারে। “আত্মত্যাগ করিতে শিক্ষা কর, স্বার্থপরতা অতি অপকৃষ্ট’-এই কথা ধৰ্ম্মেপদেষ্টা শত বৎসর পরিশ্রম দ্বারা যতটুকু বুঝাইবেন, কবি, রাম-কর্তৃক সীতাকে নির্বাসিত করাইয়া, এক কথায়,তাহার অনেক অধিক, অনেক সহজে বুঝাইয়া দিলেন। তাই মনে হয়, কবিগণ জগতের সর্বপ্রধান শিক্ষক ও সর্বপ্রধান উপকারক। ‘রাজা, রাজনীতিবেত্তা, ব্যবস্থাপক, সমাজতত্ত্ববেত্তা, ধৰ্ম্মেপদেষ্টা, নীতিবেত্তা, দার্শনিক, বৈজ্ঞানিক—সর্বাপেক্ষাই কবির শ্রেষ্ঠত্ব।” কবি উচ্চৈঃস্বরে উপদেশ দেন না বটে, কিন্তু এমন সর্বাঙ্গসুন্দর, সর্বলোকহন্দ্য, সুপবিত্ৰ চরিত্র সৃষ্টি করেন যে, তাহার প্রতি সাধু অসাধু সকলের হৃদয়ই আকৃষ্ট হয়, সকলেই বিমুগ্ধ হয়েন। সুন্দর শারদ-কৌমুদী যত ভোগ করিবে,