পাতা:কালিদাস - রাজেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণ.pdf/৩০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

f5 | 8 ዓ ፭ মহাকবি কালিদাস এ যাবৎ অযোধ্যার কোন বিশেষ বর্ণন করেন নাই । তিনি জানিতেন যে, কাব্যের প্রতিপাদ্য-বিষয়সমূহ এমন ভাবে বর্ণিত হওয়া উচিত, যাহাতে পাঠকগণ বুঝিতে না পারেন যে, “কবির অভিপ্ৰায় এখন অমুক পদার্থের বর্ণনা।” কবির উদ্দেশ্য কাব্যের সর্বত্রই একান্ত নিগুঢ় থাকা উচিত। নতুবা, কোন বিষয় বর্ণনা করিবার পূর্বেই কবি যদি মুখ-বন্ধ করিয়া বলেন যে, “আমি এখন অমুক বিষয় বর্ণনা করিব”—তবে তাহা অতীব আশ্রদ্ধেয় হয়। তাই আমরা দেখিতে পাই, মহাকবি কালিদাস তদীয় কাব্যাবলীর সর্বত্রই ঐ দোষ বৰ্জন করিয়াছেন। এমন কৌশলে তঁহার প্রতিপাদ্য বস্তুর বর্ণন করিয়াছেন যে, পাঠকবৃন্দ কবির সে কৌশল হৃদয়ঙ্গম করিবার পূর্বেই, তদীয় বর্ণিত বিষয়ের মনােরমতায় বিমুগ্ধ হইয়া পড়েন। ইহার প্রকৃষ্ট নিদর্শন কালিদাসের ইন্দুমতী-সৃষ্টিতে দেখিতে পাওয়া যায়। কবি কোথাও ইন্দুমতীর কেবল রূপ বা গুণের বর্ণনায় তত প্ৰয়াস করেন নাই। প্রসঙ্গক্রমে, মধ্যে মধ্যে ইন্দুমতীর এমন এক একটি বিশেষণ দিয়াছেন যে, তদ্দ্বারাই তাহার উদ্দেশ্য সাধিত হইয়াছে। ইন্দুমতীর স্বয়ংবর বর্ণন হইতে যদি ইন্দু মতীর সেই সকল বিশেষুণ গুলি একত্র সমাহৃত করা যায়, তবে স্পষ্টই প্ৰতীয়মান হইবে যে, দময়ন্তীর শত-শ্লোক-ব্যাপিনী সৌন্দৰ্য্যবৰ্ণনাও ইহার নিকট অকিঞ্চিৎকরী। গ্রন্থমধ্যে সর্বত্রই কবির উদ্দেশ্য অতি রহস্য রাখিতে হইবে । সেই রহস্য-ভেদ হইলেই কাব্যের একটি বিশেষ চমৎকারিতার ব্যাঘাত হইল । ,