এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
মার্কণ্ডেয় মহাভাগ সপ্তকল্পান্তজীবন।
তুমি মম কনিষ্ঠ ইহাতে দোষ নাই। কেন হেন অপ্রিয় বচন বল ভাই।। পার্থ বলিলেন স্নেহে বল মহাশয়। কপট এ কর্ম্ম প্রভু মম মত নয়।। এত বলি পার্থ করিলেন নমস্কার। মাতৃ ভ্রাতৃ সখা ছিল যত যত আর।। সবারে বিদায় মাগি গেলেন কানন। সব বন্ধুগণ হৈল বিরস-বদন।। অর্জ্জুনের সহিত চলিল দ্বিজগণ। পৌরাণিক কথকাদি গায়ক চারণ।। কতদিনে হরিদ্বারে করিল গমন। দেখিয়া হইল হৃষ্ট পাণ্ডুর নন্দন।। স্নান করি অগ্নিহোত্র করে দ্বিজগণ। গঙ্গায় প্রবেশি পার্থ করেন তর্পণ।। তর্পণ করিতে দেখে অগ্নিহোত্র স্নানে। জল হৈতে নাগকন্যা ধরিল অর্জ্জুনে।। বলে ধরি লৈয়া গেল আপন মন্দির। উত্তম আলয় তথা দেখে পার্থবীর।। অগ্নিহোত্র জ্বলে তথা দেখি ধনঞ্জয়। সেই অগ্নি পূজিলেন কুন্তীর তনয়।। নিঃশঙ্কহৃদয় পার্থ নেহি কোন ভয়। কন্যারে বলেন এই কাহার আলয়।। কি নাম ধরহ তুমি কাহার কুমারী। কি কারণে আমারে আনিলা এই পুরী।। কন্যা বলে ঐরাবত নাগরাজবংশে। কৌরব নামেতে নাগ এই পুরে বৈসে।। তার কন্যা আমি যে উলুপী মম নাম। তোমারে হেরিয়া মম বাড়িলেক কাম।। আনিলাম তোমারে যে এই সে কারণ। তোমারে ভজিব, মোর তৃপ্তি কর মন।। পার্থ বলিলেন কন্যা না জান কারণ। ব্রম্ভচারী আমি, ভ্রমি সতত কানন।। দ্বাদশ বৎসর আমি করেছি নিয়ম। কিমতে লঙ্ঘিব তাহা নাহি কোন ক্রম।। কন্যা বলে সব তত্ত্ব আমি ভাল জানি। কৃষ্ণা হেতু নিয়ম যে করিলা আপনি।। অন্য স্ত্রীতে নাহি দোষ শুন মহাশয়। তাহে আর্ত্তা আমি, কর ধর্ম্মের সঞ্চয়।। হৃদয়ে বিচারি পার্থ কন্যার বচন। স্বধর্ম্ম বুঝিয়া তারে করেন রমণ।। এক নিশা বঞ্চি তথা পার্থ মহাবীর। প্রাতঃকালে গঙ্গা হৈতে হৈলেন বাহির।। বিস্মিত হইয়া দ্বিজগণ জিজ্ঞাসিল। প্রত্যক্ষে বৃত্তান্ত পার্থ সকল কহিল।। পৃথিবী দক্ষিণাবর্ত্ত করি হেন গণি। পূর্ব্বে সিন্দুতীরে বীর গেলেন আপনি। সমুদ্রের তীরেতে মহেন্দ্র গিরিবর। মণিপুর নামে এক আছয়ে নগর।। চিত্রভানু নামে রাজা রাজ্য-অধিকারী। চিত্রাঙ্গদা নাম ধরে তাহার কুমারী।। দেবের বাঞ্ছিত কন্যা রূপে মন হরে। নগর বিহরে কন্যা দেখিল তাহারে।। কন্যা দেখি মোহিত হইল ধনঞ্জয়। শীঘ্রগতি গেলেন সে কন্যার আলয়।। পার্থ বলিলেন রাজা কর অবধান। তোমার কুমারীকে আমারে দেহ দান।। রাজা বলে কে তুমি কোথায় তব ঘর। কোন্ বংশে জন্ম তব কাহার কুমার।। অর্জ্জুন বলেন আমি পাণ্ডুর তনয়। কুন্তীগর্ভে জন্ম মম নাম ধনঞ্জয়।। এত শুনি শীঘ্রগতি উঠিয়া রাজন্। আলিঙ্গন করি দিল বসিতে আসন।। রাজা বলে এতদূর এলে কি কারণ। বিশেষিয়া কহিলেন সমস্ত অর্জ্জুন।। রাজা বলে মম ভাগ্যে আইলা এথায়। মম বিবরণ কহি শুন যে তোমায়।। প্রভঞ্জন নামে দ্বিজ মম পূর্ব্ববংশে। পুত্র বাঞ্ছা করি রাজা সেবিল মহেশে।। প্রসন্ন হইয়া বর দিলেন ঈশ্বর। তব বংশে হবে রাজা একই কুমার।। কুলক্রমে এক ভিন্ন দ্বিতীয় নহিবে। যে পুত্র হইবে সেই রাজ্যে রাজা হবে।।