পাতা:কুমার সম্ভব (কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্য্য).pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
প্রথম সর্গ।
১১

তাঁহার পদ্মে থাকিবার সুখ সম্ভোগ হয় না, সেই রূপ পদ্মে থাকিবার সময় চন্দ্রে থাকার আনন্দ তিনি অনুভব করিতে পান না। কিন্তু পার্ব্বতীর মুখে স্থান পাইয়া তাঁহার সেই দুই আমোদ এক কালে অনুভব হইতে লাগিল॥ ৪৩॥

 যদি নব পল্লবের উপর শ্বেতবর্ণ কোন কুসুম সংস্থাপিত হয় অথবা যদি পরিষ্কার প্রবালের উপর মুক্তাফল সন্নিবেশিত হয়, তাহা হইলে কথঞ্চিৎ রক্ত বর্ণ দুই ওষ্ঠের উপর বিরাজমান শুভ্র দশন কান্তি সুশোভিত পার্ব্বতীর যে মধুর হাস্য, তাহার তুলনা দেওয়া যাইতে পারে॥ ৪৪॥

 মধুরভাষিণী পার্ব্বতীর স্বর যেন অমৃত বর্ষণ করিত, সেই স্বরে যখন তিনি কথা কহিতেন, তখন কোকিলার, রবও তেমনি কঠোর বোধ হইত, যেমন তন্ত্রী ছিন্ন হইবার পর বীণা বাদন করিলে তাহা কখনই মিষ্ট বোধ হয় না॥ ৪৫॥

 সেই বিশাল-লোচনার যে চঞ্চল দৃষ্টি, বায়ু সংযোগে আন্দোলিত নীল পদ্মের সহিত উহার কিছুই বৈলক্ষণ্য ছিল না। সেই দৃষ্টি তিনিই হরিণীগণের নিকট শিক্ষা করিয়াছিলেন, অথবা হরিণীরাই তাঁহার নিকট পাইয়াছিল, ইহা নিরূপণ করা দুঃসাধ্য।॥ ৪৬॥

 সুদীর্ঘ সুশোভন তাঁহার দুই ভ্রূ যেন অঞ্জন সহযোগে তূলিকা দ্বারা আঁকিয়া দেওয়া হইয়াছে এরূপ জ্ঞান হইবার কথা। যখন সেই ভ্রূযুগল কামিনীজন-সুলভ বিলাস গুণে সঞ্চালিত হইত, তখন কন্দর্প আর অহঙ্কার করিতেন না যে তাঁহার ধনুর গুণ সুশ্রী॥ ৪৭॥