পাতা:কুরু পাণ্ডব - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১]
কুরু পাণ্ডব
২৬৩

 তখন বাসুদেব আশ্বস্ত হইয়া ভীমসেনকে প্রশংসা করিয়া কহিলেন―

 হে বীর! ধর্ম্মরাজ তোমার বাহুবলেই অরাতিবিহীন হইবেন, সন্দেহ নাই। এক্ষণে তুমি অতিশয় সাবধান হইয়া যুদ্ধে প্রবৃত্ত হও।

 এই সময়ে তীর্থপর্য্যটনান্তর বৃষ্ণিপ্রবীর বলরাম যুদ্ধ বৃত্তান্ত জ্ঞাত হইবার নিমিত্ত সে স্থানে উপস্থিত হইলেন। তাঁহাকে দেখিয়া সকলে ব্যগ্রতাসহকারে তাঁহার অভ্যর্থনা ও পাদবন্দনা করিয়া সমগ্র বৃত্তান্ত অবগত করাইলেন। ভীমসেন ও দুর্য্যোধন গদা উদ্যত করিয়া গুরুকে যথােচিত অভিবাদন করিলেন। বলরাম সকলকে আলিঙ্গন করিয়া কহিলেন―

 হে বীরগণ! আমি দ্বিচত্বারিংশ দিবস হইল তীর্থযাত্রা করিয়াছি; কিন্তু এখনও তোমাদের যুদ্ধকার্য্য শেষ হয় নাই। আমি মনে করিয়াছিলাম এ-যুদ্ধের সহিত কোনােপ্রকারে লিপ্ত থাকিব না, কিন্তু এক্ষণে শিষ্যদ্বয়ের গদাযুদ্ধ দেখিতে অভিলাষ হইতেছে। তবে এ স্থান অপেক্ষা পুণ্যতীর্থ কুরুক্ষেত্রই যুদ্ধের উপযুক্ত স্থান; অতএব চল, সকলে মিলিয়া সেখানে গমন করি।

 বলদেবের উপদেশ অনুসারে সকলে কুরুক্ষেত্রে প্রস্থান করিলেন এবং তথায় উপযুক্ত সমরাঙ্গণ নির্ব্বাচনপূর্ব্বক বলরামকে মধ্যস্থলে আসন প্রদান করিয়া অন্য সকলে চতুর্দ্দিকে যুদ্ধদর্শনার্থে উপবিষ্ট হইলেন।