কৃতস্নানা অপূর্ব্বলাবণ্যময়ী কৃষ্ণা অনুপম বসনভূষণে অলঙ্কৃতা হইয়া হস্তে বিচিত্র কাঞ্চনী মালা ধারণপূর্বক রঙ্গমধ্যে অবতীর্ণ হইলেন। ধৃষ্টদ্যুম্ন স্তব্ধতা ভঙ্গ করিয়া মৃগম্ভীরস্বরে সকলকে বিজ্ঞাপিত করিলেন–
হে সমাগত নরেন্দ্রগণ! আপনারা সকলে শ্রবণ করুন। এই ধনুর্ব্বাণ ও লক্ষ্য উপস্থিত রহিয়াছে; যিনি আকাশযন্ত্রের ছিদ্রমধ্যদিয়া পঞ্চশর নিক্ষেপপূর্ব্বক লক্ষ্যপাত করিতে পারিবেন, তাহাকেই আমার ভগিনী বরমাল্য প্রদান করিবেন।
তখন ত্রিভুবনললামভূতা কৃষ্ণার দর্শনে মােহিত নরপতিগণ পরস্পর জিগীষু হইয়া রাজাসন হইতে গাত্রোত্থান করিলেন। সভাস্থ সমস্ত লােকে মুগ্ধনয়নে কৃষ্ণার প্রতি একদৃষ্টে চাহিয়া রহিল।
এই সময়ে ধীমান্ কৃষ্ণ ইতস্তত দৃষ্টিপাত করিতে করিতে ব্রাহ্মণবেশধারী তেজঃপুঞ্জ পঞ্চ সুপুরুষকে জনসাধারণের মধ্যে উপবিষ্ট দেখিলেন, তাহাতে সহসা তাঁহার মনােযােগ আকৃষ্ট হইল। কিয়ৎকাল চিন্তামগ্ন থাকিয়া তিনি বাল্যসখা অর্জ্জুনকে নিঃসন্দেহ চিনিতে পারিলেন এবং বলদেবকেও সে দিকে দৃষ্টিপাত করিতে ইঙ্গিত করিলেন। তখন বলদেবও কৃষ্ণের অনুমান সমর্থন করিলে, উভয়ে তাঁহাদের গৃহদাহ হইতে পরিত্রাণ সম্বন্ধে আশ্বস্ত হইলেন।
একে একে দুর্য্যোধন, শাল্ব, শল্য, বঙ্গাধিপ, বিদেহরাজ প্রভৃতি রাজতনয় কিরীট, হার, অঙ্গদ, ও চক্রবান্ প্রভৃতি বিবিধ অলঙ্কারে ভূষিত হইয়া স্ব স্ব বলবীর্য্য প্রদর্শন