পাতা:কুলবধূ - যতীন্দ্রনাথ পাল.pdf/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুল-বধূ। অঙ্গে মাখিয়া পাগলা বাতাস কেবলই আসিয়া কক্ষের ভিতর আনন্দে যেন লুটাইয়া পড়িতেছিল। আনন্দের রাণী আনন্দে মাতিয়া আজি আনন্দের দ্বার খুলিয়া দিয়াছেন। আজ পুষ্পের আশীৰ্বাদ, তাই গোধূলীর সন্ধ্যা, প্রেমের আলিঙ্গনে মেশামেশি। হইয়া যেন প্রেমের মাধুরী বুঝাইয়া দিতেছিলেন । চুল বাধা, সাবান মাখা, গা ধোয় পরে পরে শেষ হইয়াছে। কমলরাণী এক্ষণে কন্যার মুখখানি তুলিয়া যত্ন ও নৈপুণ্যে ক’নে চন্দন পরাইতেছিলেন। দুইবার তিনবার বহুবার চন্দন পরান হইয়াছে কিন্তু কিছুতেই চন্দন থাকিতেছিল না-অশ্রু প্রবাহে কেবলই তাহা ত্যাসিয়া যাইতেছিল ; আজ যেন আর হাতের কাজ কিছুতেই অগ্রসর হইতে চাহিতেছিল না, কেবলই সময় অপব্যয় হইতেছিল। কিন্তু আর সময় অপব্যয় করিলে চলিবে না, শুভ সময় ক্রমেই নিকটবৰ্ত্তী হইয়া আসিতেছে। সন্ধ্যার পরই উত্তম দিন, সেই সময়েই আশীব্বাদ হইবে। গবাক্ষের বাহিরে দৃষ্টি পড়ায়, সন্ধ্যার আর বাকি নাই দেখিয়া কমলরাণীর এতক্ষণে সেই কথাটা মনে পড়িল, তিনি তাড়াতাড়ি অঞ্চলে চক্ষু মুছিয়া জোর করিয়া অশ্রু নিরোধ করিলেন, কন্যার দিকে ফিরিয়া ধীরে ধীরে বলিলেন, “কঁদেছিস কেন, আজকের দিনে কি চক্ষের জল ফেলতে আছে ?” পুষ্প জডিতকণ্ঠে বলিল, “তবে তুমি কেন কঁাদছ মা ?” কমলরাণী কঁাদিতেছিলেন। কেন, তাহ বলিতেও যে তঁাহার বুক ফাটিয়া যায়। যাহার আজ সর্বাপেক্ষা আনন্দ হইতে,-যাহার উৎসাহের পরিসীমা থাকিত না-যাহার আদরের প্রাণাপেক্ষ প্ৰিয়তম। SBN