যদি ভগবান তাকে স্বয়ং পিতৃবন্ধুর মূর্ত্তি ধরে এসে আমার হাত থেকে কেড়ে নিয়ে রক্ষা করেন, আমি তার কি করতে পারি?”
ভূমে প্রচণ্ড পদাঘাতের শব্দ শোনা গেল, “কালকের মধ্যে তুমি তাকে পুরো ডোজ দিয়ে মারবে কি না? হ্যা কিম্বা না—উত্তর দাও। ধর্ম্মতত্ত্বের বক্তৃতা করতে যেও না। হ্যাঁ, কিম্বা না? এই শেষ কথা।”
“না”—
“এক্ষুণি মরবে জেনেও?”
“আঃ, মরলে ত আমি বেঁচেই যাই। যে যন্ত্রণা দিন-রাত ভোগ করছি আমি, মরণ তো আমার পক্ষে ভগবানের পরম আশীর্ব্বাদ।”
“তবে সেই আশীর্বাদই গ্রহণ কর—হতভাগী।”
“যাক স্বামীর হাত থেকে তবু একটা পাবার মত কিছু ভাল জিনিষ এতদিনে পেলুম। অনেক ধন্যবাদ!”
গুড়ম্ গুম্ একটা মাত্র ভীষণ আওয়াজ শোনা গেল। আর কোন প্রতিশব্দ পর্য্যন্ত নয়। মিসেস্ পাকড়াসী তাঁর স্বামীর দান বীরাঙ্গানার মত নির্ব্বিকার চিত্তে নিঃশব্দেই গ্রহণ করে নিলেন বুঝতে পারা গেল।
পিস্তলের আওয়াজে দিব্যেন্দুর চাকর দবোয়ান অনেকেই ছুটতে ছুটতে সেইখানে এসে জড়ো হয়েছিল। ঝিয়েরাও আর্ত্তদৃষ্টি মেলে মেলে এসে দাঁড়াতে লাগলো। আসেন নি শুধু ইলা দেবী। হয়ত ঘুম ভাঙেনি, নয়তো মেয়ে ফেলে আসতে ভরসা করেন নি। আসেন নি সে ভালই করেছেন।
মিসেস্ পাকড়াসীর ঠিক হার্টের উপর রিভলবারের অব্যর্থ গুলি বিঁধেছে। এত কাছ থেকে মারা হয়েছে যে পিস্তলের নল ওর বুকে ঠেকেছিল তার প্রমাণ জামা কাপড়েই রয়েছে। প্রাণ বার হতে মুহূর্ত্তকালও সময় লাগেনি।