পাতা:ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু - অনুরূপা দেবী.pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০১
হেমলক

 পুলিশ না এনে উপায় নেই। লাস চালানও দিতে হলো। ওর জিনিষপত্রের মধ্যে থেকে কতকগুলি জিনিষ পাওয়া গেল যাতে করে জানা গেল উনি মিসেস্ পাকড়াসী নন, মিসেস্ হাজরা। কুমুদিনী হাজরা। একটা ছোট্ট কাঁচের শিশিতে সিকিভাগ ভর্ত্তি এক প্রকার সাদা মিহি গুঁড়া পাওয়া গেল, সেটা যে কি ডাক্তারী পরীক্ষাতেও তা’ স্থির হলো না। আমি অনেক চেষ্টা করে সেটা আদায় করে রেখে দিলেম। “সো-পয়জন” করার কথাটা তো আর ভুলে যাইনি। হয়ত ঐটেই সেই “ফুল ডোজ” যার সামান্য অংশ শরীরে ঢুকে দিব্যেন্দুর মেয়েটি আস্তে আস্তে মরণের মুখে এগিয়ে চলেছিল। ঘোর সন্দেহ হলে জিনিষটা আমার ‘হেমলক’ নয়তো?

 সব চাইতে বড় সমস্যা এই বাড়ীর মধ্যে অর্থাৎ বাগানের ভিতর আততায়ী এলো কি করে? শুধু ঐ একবারই নয়, আমার সাক্ষ্য থেকেই সবাই সেদিন জানতে পারলে—এর পূর্ব্বেও তিনি ঐভাবে এ বাড়ীতে গতায়াত করেছেন। মিসেস্ পাকড়াসীর সহায়তায়?···হতে পারে। কিন্তু ওকে খুন করে সে কোথা দিয়ে পালালো? কোন দিকের কোন রন্ধ্র পর্য্যন্ত তো খোলা ছিল না! কেয়াবন কেটে ফেলা হলো; কিন্তু ওর তলায় কোথাও কিছুই তো নেই। দিব্যেন্দু যখন এই জায়গাটা কেনে, এটা পরিত্যক্ত একটা নীলকুঠি ছিল। সেই সময়কার সেই ভাঙ্গা বাড়ীটার অবশেষ তারই একটা দিকের ভিতটা এই পর্য্যন্ত ছিল বটে, সেই নিশানাটাই শুধু কেয়া ঝোপ সাফ হতে জানতে পারা গেল। বনটা সম্পূর্ণ কেটে শেষ করেও আর তো কিছুই বেরুলো না! দিবু বললে, বড় চারচৌকা ভাবের কুঠিটার গড়ন ছিল বলে এই বাড়ী করবার সময় এই দিকের ভিত্তিটা লাইন ধরে বাদ দিয়েছিল। তিন দিকের ভিত খুঁড়ে ফেলে তার উপর বাড়ীটা করেছে। এদিককার খানিক খানিক বাগানের দরকার হিসাবে রাস্তা