পাতা:ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু - অনুরূপা দেবী.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ক্রৌঞ্চ-মিথুনের মিলন-সেতু
৪০

সমাজ। ব্রাহ্ম সমাজ প্রভৃতিতে তবু কতকটা রজোগুণের আধিক্য আছে, নিজ সমাজের লােককে তাঁরা বিশ্বে সম্মানিত করিতে চান, হিন্দু সমাজের একটি আত্ম-প্রতারণাত্মক শব্দ আছে, “ধৃষ্টতায় উপেক্ষা,” ব্যস্! কিন্তু এ ধৃষ্টতা কাহাদের? সত্যকে ইচ্ছা করিয়া যারা অপ্রকাশ রাখে তাদের নয়?

 সাহিত্যে, সমাজে, স্বাদেশিকতার প্রথম পরিকল্পনায় বাংলাদেশ পৃথ্বীদেবের নিকটে অপূরণীয় ঋণে আবদ্ধ, ভবিষ্যতের ইতিহাসকার যদি সত্যানুসন্ধিৎসু হন তবে অকুণ্ঠিত শ্রদ্ধায় একথা স্বীকার করিতে বাধ্য হইবেনই, যতদিন কোন সত্য-দ্রষ্টা প্রকৃত ঐতিহাসিকের উদ্ভব না হইতেছে ততদিন এ সত্য অবশ্য গােপনই থাকিবে।

 সুদর্শনারা যেদিনে সদ্য-চিত্রিতা ভারত মাতার মূর্ত্তির উদ্দেশ্যে প্রণাম নিবেদন করিত, তখন “বন্দে মাতরম” জন্মগ্রহণ করে নাই, তখন তার পূর্ব্বরূপ পৃথ্বীদেবের রচিত সংস্কৃত শ্লোকের মূর্ত্তিতে প্রকট ছিল, সে এই:—

“মাতর্নমামি সততং সতীদেহরূপাং,
মাতর্নমামি বসুধাতল পুণ্যতীর্থাং,
মাতর্নমামি পদযুগ্মধৃতা সমুদ্রাং
মাতর্নমামি হিমগৌর কিরিটিভূষাং।

চার

 জীবনের সবচেয়ে মধুর মধুরতর মধুরতম সুখস্বপ্ন অকস্মাৎ ভঙ্গ হইয়া গেল। অসুস্থ হইয়া পৃথ্বীদেব এই সব্-ডিভিসনের পুত্রাবাস ছাড়িয়া তাঁর বেনারসের দুর্গাকুণ্ড রােডের বাগানবাটীতে সহসাই চলিয়া গেলেন। সঙ্গে তাঁর দুজন চিরসেবক মাত্র গেল। আনন্দনাথের ছুটি নাই, পাওয়াও সম্ভব নয়, তাঁর পত্নী ধরিত্রী দেবীর