প্রানীর সাড়া-শব্দ নাই, কোথাও একটাও আলোক নাই। কোচমান অতি কষ্টে গাড়ীর আলোকে শকট-চালনা করিতেছিল।
কিছুদূর এইরূপে গমন করিয়া কোচমান সহসা গাড়ী থামাইল। আমি ভাবিলাম, বুঝি সে যথাস্থানে আসিয়া পড়িয়াছে এবং সেই মনে করিয়া গাড়ী হইতে অবতরণ করিতে উদ্যত হইয়াছি, এমন সময় কোচমান বলিল, “বাবু! পথ ভুলে অন্যদিকে এসে পড়েছি। সে বাগানখানি এদিকে নয়। আমরা পূর্ব্বদিকে যে গলিটা ছেড়ে এসেছি, বোধ হয় সেই পথেই আমাদিগকে যেতে হবে।”
একে রাত্রি অধিক, তাহার উপর সেই ঘোর অন্ধকার, তাহাতে আবার আমি ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছিলাম, কোচমানের কথায় আমার সর্ব্বাঙ্গ জ্বলিয়া উঠিল। ক্রোধে কাঁপিতে কাঁপিতে আমি কর্কশস্বরে বলিলাম, “তুমি কি মনে করিয়াছ যে, আমার চক্ষে ধূলি দিয়া পলায়ন করিবে?” আমি বহুদিন হইতে এই কার্য্য করিতেছি। চোর, ডাকাত, দস্যুদিগের সহিত আমার চির বিবাদ, বদ-মায়েসগণ আমার নাম শুনিলে থর থর বিকম্পিত হয়! আর তুমি একজন সামান্য কোচমান হইয়া আমার সহিত চাতুরী করিতেছ? ধন্য তোমার সাহস! কিন্তু তুমি মনে করিও না যে, আমি তোমার কথায় ভুলিব। যদি ভাল চাও, এখনই সেইস্থানে লইয়া চল।”
আমাকে অত্যন্ত রাগান্বিত দেখিয়া কোচমান গাড়ী হইতে অবতরণ করিল এবং আমার পদতলে বসিয়া জোড়হাত করিয়া বলিল, “হুজুর! আমার এমন সাহস নাই যে, আমি পুলিসের বাবুকে প্রবঞ্চনা করিব। আল্লার দোহাই, আমি সত্য সত্যই পথ ভুলে গিয়েছি। একে _______’তে এই ঘোর অন্ধকার, আমি