পাতা:খুন না চুরি? - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
খুন না চুরি?
২১

রাস্তা চিন্‌তে পাচ্চি না। আপনি একটু এই গাড়ীতে বসুন, আমি একবার দেখে আসি।”

 এই বলিয়া উত্তরের অপেক্ষা না করিয়াই সে সেখান হইতে চলিয়া গেল। আমি সেই ভয়ানক তমসাচ্ছন্ন নিশীথে একাকী সেই অপরিচিত স্থানে বসিয়া রহিলাম। একরার মনে হইল, লোকটা যদি দলবল লইয়া হঠাৎ আমায় আক্রমণ করে, তাহা হইলেই আমার সর্ব্বনাশ! একা দুই জনের বিরুদ্ধেও আত্মরক্ষা করিতে পারা যায়, কিন্তু যদি তিন চারিজন বা ততোধিক লোকে একেবারে চারিদিক হইতে আক্রমণ করে, তাহা হইলে কি করিব? লোকটাকে ছাড়িয়া দিয়া ভাল করি নাই। সে ত স্বচ্ছন্দে গাড়ী লইয়া পথ অন্বেষণ করিতে পারিত! গাড়ীর সহিত আমাকে এখানে রাখিয়া গেল কেন? নিশ্চয়ই তাহার মনে কোন দুরভিসন্ধি আছে।

 এই প্রকার চিন্তা করিয়া আমি পকেট হইতে ক্ষুদ্র পিস্তলটী বাহির করিলাম এবং গাড়ী হইতে নামিয়া নিকটস্থ একটা প্রকাণ্ড বৃক্ষের তলে গিয়া প্রচ্ছন্নভাবে দাঁড়াইয়া রহিলাম।ভাবিলাম, যদি কোচমান একা আইসে, তাহা হইলে কোন কথাই নাই। কিন্ত যদি লোক জন লইয়া আইসে, তাহা হইলে তাহার অভিপ্রায় নিশ্চয়ই মন্দ।

 কিছুক্ষণ পরে অদূরে কাহার পদশব্দ শুনিতে পাইলাম। আমি পিস্তলটী ঠিক করিয়া ধরিলাম। কিন্তু আমার অনুমান মিথ্যা হইল। কোচমান একাই ফিরিয়া আসিয়া একেবারে গাড়ীর নিকটে গেল এবং দরজার নিকট দাঁড়াইয়া বলিল, “হুজুর! পথ ঠিক করিয়াছি। আর কোন ভয় নাই।”