পাতা:গল্পকল্প - পরশুরাম.pdf/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চিরঞ্জীব

গায়ের রং, বাবরি চুল, গাল পর্যন্ত জুলফি, মোটা গোঁফের নীচে পরে ঠোঁট। পরনে মিহি ধুতি, কাছার এক কোণ ঝুলছে। গায়ে লম্বা রেশমী কোট, তার উপর ভাঁজ করা আজানলম্বিত জরিপাড় উড়‍ুনি। কপালে রক্তচন্দনের ফোঁটা, দুই কানে হীরের ফুল, আঙুলে অনেকগুলি নীলা চুনি পান্নার আংটি, পায়ে পনর নম্বর চম্পল।

 ঝকঝকে সাদা দাঁত বার ক’রে হেসে আগন্তুক পরিষ্কার বাংলায় হরিহরবাবুকে বললেন, ঘাবড়াবেন না মশায়, আমি শ‍ুধু দাঁড়িয়ে থাকব। পান খেয়ে পিক ফেলব না, সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়ব না, আশ্চর্য মাজন বেচব না, বন্যা ভূমিকম্পের চাঁদা চাইব না, সর্বহারার গানও গাইব না। যদি পরে ভিড় কমে তবে একটু বসবার জায়গা করে নেব। যদি অনুমতি দেন তবে আলাপ ক’রে আপনাদের খুশী করবার চেষ্টা করব।

 শরৎ নামক ছেলেটি বললে, কতক্ষণ কষ্ট করে দাঁড়িয়ে থাকবেন, আপনি আমার পাশে বসুন। আগন্তুক কৃতজ্ঞতাসূচক নমস্কার ক’রে ব’সে পড়লেন।

 হালদার মশায় বললেন, মহাশয়ের নামটি কি? নিবাস কোথায়? কি করা হয়? কোথায় যাওয়া হচ্ছে?

 আগন্তুক উত্তর দিলেন, আমার নাম লংকুস্বামী কর্বূরঙ্গ রেড্ডি। আদি নিবাস ধ্বংস হয়ে গেছে, এখন ভারতের নানা স্থানে ঘুরে বেড়াই। কিন্তু, করি না, মহাদেব আর রামচন্দ্রের কৃপায় আমার কোনও অভাব নেই। এখন আসানসোলে

১৩৭