পাতা:গল্পকল্প - পরশুরাম.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অটলবাবুর অন্তিম চিন্তা

শ‍ুনিস— শীতল বাতাস ভাল লাগে না সখী, আমার বুকের পাঁজর ঝাঁজর হ’ল— যত সব ন্যাকামি।

 রাধারানী ঠোঁট বেকিয়ে চলে গেল। ডাক্তার বললেন, সার, আপনি বড় বেশী কথা বলছেন। রাত হয়েছে, এখন চুপ ক’রে একটু ঘুমোবার চেষ্টা কর‍ুন।

 —বেশী কথা তোমরাই বলছ। আর দেরি ক’রো, না, যা জিজ্ঞাসা করেছি তার স্পষ্ট উত্তর দাও।

 ডাক্তার তাঁর স্টেথোস্কোপের নল চটকাতে চটকাতে বললেন, দু-চার ঘণ্টা হ’তে পারে, দু-চার দিনও হ’তে পারে, ঠিক বলা অসম্ভব। ইনজেকশনটা দিয়ে দি, আপনি অক্সিজেন শ‍ুঁকতে থাকুন, কষ্ট কমবে।

 যথাকর্তব্য ক’রে ডাক্তার অটলবাবুর বিধবা পত্রবধূকে বললেন, হুঁশিয়ার হয়ে থাকতে হবে, আজ রাত বোধ হয় কাটবে না। নার্স ওঁর ঘরে থাকুক, আমি এই পাশের ঘরে রইলুম।


টলবাবু অত্যন্ত হিসাবী লোক, আজীবন নানারকম কারবার করেছেন। তাঁর বয়স আশি পেরিয়েছে, শরীর রোগে অবসন্ন, কিন্তু বৃদ্ধি ঠিক আছে। মরণ আসন্ন জেনে তিনি মনে মনে ইহলোকের ব্যালান্স-শীট এবং পরলোকের একটা আন্দাজী প্রসপেকটস খাড়া করবার চেষ্টা করতে লাগলেন।

২৩