পাতা:গল্পকল্প - পরশুরাম.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গল্পকল্প

চাবির কথা তাঁর আর মনে রইল না। জলযোগ এবং ঘণ্টা খানিক বিশ্রামের পর তিনি মোকদ্দমার কাগজপত্র দেখবার জন্য আবার নীচের ঘরে এলেন এবং আলো জ্বাাললেন। প্রথমেই পাথরটি নজরে পড়ল। বেশ গোলগাল চকচকে নুড়ি, কাল সকালে তাঁর ছোট খোকাকে দেবেন, সে গ‍ুলি খেলবে। পরেশবাবু তাঁর টেবিলের দেরাজ টেনে পাথরটি রাখলেন। তাতে ছুরি কাঁচি পেনসিল কাগজ খাম প্রভৃতি নানা জিনিস আছে। কি আশ্চর্য! ছুরি আর কাঁচি হলদে হয়ে গেল। পরেশবাবু পাথরটি নিয়ে তাঁর কাচের দোয়াতে ঠেকালেন, কিছুই হ’ল না। তার পর একটা সীসের কাগজ-চাপায় ঠেকালেন, হলদে আর প্রায় ডবল ভারী হয়ে গেল। পরেশবাবু কাঁপা গলায় তাঁর চাকরকে ডেকে বললেন, হরিয়া, ওপর থেকে আমার ঘড়িটা চেয়ে নিয়ে আয়। হরিয়া ঘড়ি এনে দিয়ে চ’লে গেল। নিকেলের সম্ভা হাত-ঘড়ি, তাতে চামড়ার ফিতে লাগানো। পাথর ছোঁয়ানো মাত্র ঘড়ি আর ফিতের বকলস সোনা হয়ে গেল। সঙ্গে সঙ্গে ঘড়িটা বন্ধ হ’ল, কারণ স্প্রিংও সোনা হয়ে গেছে, তার আর জোর নেই।

 পরেশবাবু কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে রইলেন। ক্রমশ তাঁর জ্ঞান হ’ল যে তিনি অতি দুর্লভ পরশ পাথর পেয়েছেন যা ছোঁয়ালে সব ধাতুই সোনা হয়ে যায়। তিনি হাত জোড় ক’রে কপালে বার বার ঠেকাতে ঠেকাতে বললেন, জয় মা কালী, এত দয়া কেন মা? হরি, তুমিই সত্য তুমিই সত্য, একি লীলা

৪৪