খেলছ বাবা? স্বপ্ন দেখছি না তো? পরেশবাবু তাঁর বাঁ হাতে একটি প্রচণ্ড চিমটি কাটলেন, তবু ঘুম ভাঙল না, অতএব স্বপ্ন নয়। তাঁর মাথা ঘারতে লাগল, বুক ধড়ফড় করতে লাগল। শকুন্তলার মতন তিনি বুকে হাত দিয়ে বললেন, হৃদয়, শান্ত হও; এখনই যদি ফেল কর তবে এই দেবতার দান কুবেরের ঐশ্বর্ষ ভোগ করবে কে? পরেশবাবু শুনেছিলেন, এক ভদ্রলোক লটারিতে চার লাখ টাকা পেয়েছেন শুনে আহ্লাদে এমন লাফ মেরেছিলেন যে কড়ি কাঠে লেগে তাঁর মাথা ফেটে গিয়েছিল। পরেশবাবু নিজের মাথা দু হাত দিয়ে চেপে রাখলেন, পাছে লাফ দিয়ে ফেলেন।
অত্যন্ত দুঃখের মতন অত্যন্ত আনন্দও কালক্রমে অভ্যস্ত হয়ে যায়। পরেশবাবু শীঘ্রই প্রকৃতিস্থ হলেন এবং অতঃপর কি করবেন তা ভাবতে লাগলেন। হঠাৎ জানাজানি হওয়া ভাল নয়, কোন্ শত্রু কি বাধা দেবে বলা যায় না। এখন শুধু, তাঁর গৃহিণী গিরিবালাকে জানাবেন, কিন্তু মেয়েদের পেটে কথা থাকে না। পরেশবাব, দোতলায় গিয়ে একটু একটু করে সইয়ে সইয়ে পত্নীকে তাঁর মহা সৌভাগ্যের খবর জানালেন এবং তেত্রিশ কোটি দেবতার দিব্য দিয়ে বললেন, খবরদার, যেন জানাজানি না হয়।
৪৫