গৃহিণীকে সাবধান করলেন বটে, কিন্তু পরেশবাবু নিজেই একটু অসামাল হয়ে পড়লেন। শোবার ঘরের একটা লোহার কড়িতে পরশ পাথর ঠেকালেন, কড়িটা সোনা হওয়ার ফলে নরম হ’ল, ছাত বসে গেল। বাড়িতে ঘটি বাটি থালা বালতি যা ছিল সবই সোনা ক’রে ফেললেন। লোকে দেখে আশ্চর্য হয়ে ভাবতে লাগল, এসব জিনিস গিলটি করা হ’ল কেন? ছেলে মেয়ে আত্মীয় বন্ধু নানারকম প্রশ্ন করতে লাগল। পরেশবাবু ধমক দিয়ে বললেন, যাও যাও, বিরক্ত ক’রো না, আমি যাই করি না কেন তোমাদের মাথাব্যথা কিসের? প্রশ্নের ঠেলায় অস্থির হয়ে পরেশবাবু লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা প্রায় বন্ধ ক’রে দিলেন, মক্কেলরা স্থির করলে যে তাঁর মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
এর পর পরেশবাবু ধীরে ধীরে অগ্রসর হ’তে লাগলেন, তাড়াতাড়ি করলে বিপদ হ’তে পারে। কিছু সোনা বেচে নোট পেয়ে ব্যাংকে জমা দিলেন, কম্পানির কাগজ আর নানারকম শেয়ারও কিনলেন। বালিগঞ্জে কুড়ি বিঘা জমির উপর প্রকাণ্ড বাড়ি আর কারখানা করলেন, ইট সিমেণ্ট লোহা কিছুরই অভাব হ’ল না, কারণ, কর্তাদের বশ করা তাঁর পক্ষে অতি সহজ। এক জায়গায় রাশি রাশি মরচে পড়া মোটরভাঙা লোহার টুকরো প’ড়ে আছে। জিজ্ঞাসা করলেন, কত দর? লোহার মালিক অতি নির্লোভ, বললে, জঞ্জাল তুলে নিয়ে যান বাবু গাড়ি ভাড়াটা দিতে পারব না। পরেশবাবু
৪৬