পাতা:গল্পকল্প - পরশুরাম.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গল্পকল্প

 প্রিয়তোষ নির্বিকার। পরেশবাবু তাকে পরশপাথরটা দিয়ে বললেন, এটাকে আজই ধ্বংস ক’রে ফেল, পুড়িয়ে, অ্যাসিডে গলিয়ে, অথবা অন্য যে কোনও উপায়ে পার। প্রিয়তোষ বললে, রাইট-ও।

 বিকালবেলা একজন দারোয়ান দৌড়ে এসে পরেশবাবুকে বললে, জলদি আসুন হ‍ুজুর, বিসোআস সাহেব পাগলা হয়ে গেছেন, আপনাকে ডাকছেন। পরেশবাবু তাড়াতাড়ি গিয়ে দেখলেন, প্রিয়তোষ তার শোবার ঘরে খাটিয়ায় শুয়ে কাঁদছে। পরেশবাবু জিজ্ঞাসা করলেন, ব্যাপার কি? প্রিয়তোষ উত্তর দিলে, এই চিঠিটা প’ড়ে দেখুন সার। পরেশবাবু পড়লেন —

 প্রিয় হে প্রিয়, বিদায়। বাবা রাজী নন, তাঁর নানা রকম আপত্তি। তোমার চাল-চুলো নেই, পরের বাড়িতে থাক, মোটে দেড় শ টাকা মাইনে পাও, তার ওপর আবার জাতে খীষ্টান, আবার আমার চাইতে বয়সে এক বৎসরের ছোট। বললেন, বিয়ে হতেই পারে না। আর একটি খবর শোন। গুঞ্জন ঘোষের নাম শনেছ? চমৎকার গায়, সুন্দর চেহারা, কোঁকড়া চুল। সিভিল সম্পাইএ ছ শ টাকা মাইনে পায়, বাপের একমাত্র ছেলে, বাপ কনট্রাকটারি ক’রে নাকি কোটি টাকা করেছে। সেই গ‍ুঞ্জনের সঙ্গে আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। দঃখ ক’রো না, লক্ষ্মীটি। বকুল মল্লিককে চেন তো? আমার চেয়ে তিন বছরের জুনিয়ার, ডায়োসিসানে এক সঙ্গে পড়েছি। আমার কাছে দাঁড়াতে পারে না, তা হ’ক, অমন মেয়ে হাজারে একটি

৫৪