পাতা:গল্পকল্প - পরশুরাম.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গল্পকল্প

প্রিয়তোষ হেনরি বিশ্বাসের মনে বিন্দুমাত্র অভিমান নেই। তার শ‍ুদ্ধি হ’ল, এক সের ভেজিটেব‍্ল ঘি দিয়ে হোম হ’ল, পাঁচ জন ব্রাহ্মণ লুচি-ছোঁকা-দই-বোঁদে খেলে। তার পর শভ লগ্নে হিন্দোলা-প্রিয়তোষের বিয়ে হয়ে গেল। কিন্তু জগাইবাবু আর তাঁর কন্যার মনস্কামনা পূর্ণ হল না, পাথরটা নামল না। কিছুদিন পরে এক আশ্চর্য ব্যাপার দেখা গেল —পরেশবাবুর তৈরি সমস্ত সোনার জেল্লা ধীরে ধীরে ক’মে যেতে লাগল, মাস খানিক পরে যেখানে যত ছিল সবই লোহা হয়ে গেল।

 ব্যাখ্যা খুব সোজা। সকলেই জানে যে ব্যর্থ প্রেমে স্বাস্থ্য যেমন বিগড়ে যায়, তৃপ্ত প্রেমে তেমনি চাঙ্গা হয়, দেহের সমস্ত যন্ত্র চটপট কাজ করে, অর্থাৎ মেটাবলিজম বেড়ে যায়। প্রিয়তোষ এক মাসের মধ্যে পরশ পাথর জীর্ণ ক’রে ফেলেছে, এক্স রে-তে তার কণামাত্র দেখা যায় না। পাথরের তিরোধানের সঙ্গে সঙ্গে পরেশবাবুর সমস্ত সোনা পূর্বরূপ পেয়েছে।

 হিন্দোলা আর তার বাবা ভীষণ চটে গেছেন। বলছেন, প্রিয়তোষটা মিথ্যাবাদী ঠক জোচ্চোর। ধাপ্পায় বিশ্বাস ক’রে তাঁরা আশায় আশায় এত দিন বৃথাই ওই খীষ্টানটার ময়লা ঘেঁটেছেন। কিন্তু পরশ পাথর হজম ক’রে প্রিয়তোষ মনে বল পেয়েছে, তার বুদ্ধিও বেড়ে গেছে, পত্নী আর শ্বশ‍ুরের বাক্যবাণ সে মোটেই গ্রাহ্য করে না। এমন কি, হিন্দোলা যদি বলে, তোমাকে তালাক দেব, তবু সে সায়ানাইড খাবে না। সে

৫৮