পাত্র ও পাত্রী a○○ বললাম, “কাজ আছে, জটিয়ে দিতে পারব।” . এটা সম্পণে সত্য কথা নয়। মেয়ে-ইস্কুলের খবর আমি কী জানি। কিন্তু, মেয়েইস্কুল পথাপন করতে তো দোষ নেই। 帖 দীপালি বললে, “আপনি আমাদের বাড়ি গিয়ে একবার মায়ের সঙ্গে এ কথার আলোচনা করে দেখবেন ?" আমি বললাম, “আমি কাল সকালেই যাব।” দীপালি চলে গেল। কাগজ-পড়া আমার বন্ধ হল। ছাতের উপর বেরিয়ে এসে চৌকিতে বসলম। তারাগুলোকে জিজ্ঞাসা করলাম, কোটি কোটি যোজন দরে থেকে তোমরা কি সত্যই মানুষের জীবনের সমস্ত কম সত্র ও সম্বন্ধসত্র নিঃশব্দে বসে বসে বনছ।" এমন সময় কোনো খবর না দিয়ে হঠাৎ বিশ্ববপতির মেজো ছেলে শ্রীপতি ছাতে এসে উপস্থিত। তার সঙ্গে যে আলোচনাটা হল, তার মম" এই— শ্ৰীপতি দীপালিকে বিবাহ করবার আগ্রহে সমাজ ত্যাগ করতে প্রস্তুত। বাপ বলেন, এমন দাকাৰ্য করলে তিনি তাকে ত্যাগ করবেন। দীপালি বলে, তার জন্যে এত বড়ো দুঃখ অপমান ও ত্যাগ স্বীকার কেউ করবে এমন যোগ্যতা তার নেই। তা ছাড়া শ্রীপতি শিশুকাল থেকে ধনীগহে লালিত ; দীপালির মতে, সে সমাজচু্যত এবং নিরাশ্রয় হয়ে দারিদ্র্যের কস্ট সহ্য করতে পারবে না। এই নিয়ে তক চলছে, কিছতে তার মীমাংসা হচ্ছে না। ঠিক এই সংকটের সময় আমি মাঝখানে পড়ে এদের মধ্যে আর-একটা পারকে খাড়া করে সমস্যার জটিলতা অত্যন্ত বাড়িয়ে তুলেছি। এইজন্যে শ্ৰীপতি আমাকে এই নাটকের থেকে প্রফেশিটের কাটা অংশের মতো বেরিয়ে যেতে বলছে । আমি বললাম, “যখন এসে পড়েছি তখন বেরোচ্ছি নে। আর, যদি বেরোই তা হলে গ্রন্থি কেটে তবে বেরিয়ে পড়ব ।” বিবাহের দিনপরিবতন হল না। কেবলমাত্র পাত্রপরিবতন হল। বিশ্বপতির অননয় রক্ষা করেছি, কিন্তু তাতে তিনি সন্তুষ্ট হন নি। দীপালির অননয় রক্ষা করি নি, কিন্তু ভাবে বোধ হল সে সন্তুষ্ট হয়েছে। ইস্কুলে কাজ খালি ছিল কি না জানি নে কিন্তু আমার ঘরে কন্যার স্থান শান্য ছিল, সেটা পণ হল। আমার মতো বাজে লোক যে নিরর্থক নয়, আমার অথাই সেটা শ্রীপতির কাছে প্রমাণ করে দিলে। তার গহদীপ আমার কলকাতার বাড়িতেই জবলল। ভেবেছিলাম, সময়মত বিবাহ না সেরে রাখার মুলতবি অসময়ে বিবাহ করে পরণ করতে হবে, কিন্তু দেখলাম উপরওয়ালা প্রসন্ন হলে দটো-একটা ক্লাস ডিঙিয়েও প্রোমোশন পাওয়া যায়। আজ পঞ্চান বছর বয়সে আমার ঘর নাৎনিতে ভরে গেছে, উপরন্তু একটি নাতিও জটেছে। কিন্তু, বিশ্বপতি বাবার সঙ্গে আমার কারবার বন্ধ হয়ে গেছে—কারণ, তিনি পারটিকে পছন্দ করেন নি। * পৌষ ১৩২৪
