পাতা:গল্পাঞ্জলি.djvu/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাল্যবন্ধু ó ö পর্যান্ত বড় বাবু অপেক্ষা করিয়া, পরশ্ব মন্তব্য দাখিল করিবেন । দাখিল করিলেই বড় সাহেব তাহাতে সক্তি করিয়া দিবেন—বস—s, I Fস । তাঙ্গর পর সৃঙ্গ নাই—অন্ন নাই। অন্ত কোনও আফিসে কৰ্ম্মের সুবিধা হইতে পারিবে না কি ?—কিন্তু তাঙ্গার প্রধান অন্তরায়, ইহারা নলিনীকে সে সার্টিফিকেট দিবে না। যদি বা দেয়, তাহাতে লিখিয়া দিবে—কার্য্যে অপটু বলিয়া বৎসরান্তে পদচ্যুত করা গেল। সে সাটিফিকেট কোথাও দেখাইয় ফল কি ? নলিনী বিছানায় পড়িয়া ছট্‌ফট্‌ করিতে করিতে উক্ত প্রকার অকল পাথার চিন্তা করিতে লাগিল । হঠাৎ নিম্নে উঠান হইতে বাসন-মাজার শব্দ নলিনীর কর্ণে আসিল । আজ হেমাঙ্গিনী স্বয়ং বাসন মাজিতেছে— কারণ ঝির জর হইয়াছে। এই পৌষ মাসের শীত, রাত্রে হেমাঙ্গিনীকে স্বহস্তে বাসন মাজিতে হইতেছে । অথচ এমন দিন ছিল যখন একটা কেন, দুইটা ঝির একসঙ্গে পীড়া হইলেও বাড়ীর মেয়েদের বাসন মাজিতে হৃষ্টত না । সঙ্গে সঙ্গে নলিনীর ইহাও মনে হইল, বাসনও আর বেশী দিন মাজিবার আবশ্যকতা থাকিবে না । পথ যখন গৃহ হইবে, ভিক্ষা যখন জীবিক হুইবে, তখন বাসনও থাকিবে না, বাসনে করিয়া কিছু খাইবার ও থাকিবে না । নলিনীর মনশ্চক্ষের উপর এক খানি ছৰি বেন ভাসিয়া উঠিল—নলিনী আগে আগে মেয়েটির হাত ধরিয়া, হেমাঙ্গিনী পাছে পাছে ছেলেটি কোলে করিয়া, কলিকাতার পথে ভিক্ষা করিয়া বেড়াইতেছে। যেন শ্যামবাজারে বড় বাবুর বাড়ীর দ্বারেই দাড়াচয়৷ আছে । নলিনীর চক্ষু দিয়া অশ্র ঝরিতে লাগিল । আরও কিয়ৎক্ষণ কাটিলে, গৃহকাৰ্য্য শেষ করিয়া, হেমাঙ্গিনী শয়ন করিতে আসিল । শয্যায় প্রবেশ করিয়া কোমলকণ্ঠে বলিল—“তুমি এখনও ঘুমোও নি ?”