পাতা:গল্প-দশক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২১৬
গল্প-দশক।

ফল হইল না। অবশেষে বাহিরে আসিয়া রায়ডাঙ্গার দূতবর্গের নিকট মিথ্যা করিয়া বলিতে হইল, কন্যার হঠাৎ অত্যন্ত অসুখ করিয়াছে, আজ আর দেখান হইবে না। তাহারা ভাবিল মেয়ের বুঝি কোন একটা দোষ আছে, তাই এইরূপ চাতুরী অবলম্বন করা হইল।

 তখন মতিবাবু ভাবিতে লাগিলেন, তারাপদ ছেলেটি দেখিতে শুনিতে সকল হিসাবেই ভাল; উহাকে আমি ঘরেই রাখিতে পারি, তাহা হইলে আমার একমাত্র মেয়েটিকে পরের বাড়ি পাঠাইতে হইবে না। ইহাও চিন্তা করিয়া দেখিলেন, তাঁহার অশান্ত অবাধ্য মেয়েটির দুরন্তপনা তাঁহাদের স্নেহের চক্ষে যতই মার্জ্জনীয় বোধ হউক শ্বশুর-বাড়িতে কেহ সহ্য করিবে না।

 তখন স্ত্রী পুরুষে অনেক আলোচনা করিয়া তারাপদর দেশে তাহার সমস্ত কৌলিক সংবাদ সন্ধান করিবার জন্য লোক পাঠাইলেন। খবর আসিল যে, বংশ ভাল কিন্তু দরিদ্র। তখন মতি বাবু ছেলের মা এবং ভাইয়ের নিকট বিবাহের প্রস্তাব করিয়া পাঠাইলেন। তাঁহারা আনন্দে উচ্ছ্বসিত হইয়া সম্মতি দিতে মুহূর্ত্তমাত্র বিলম্ব করিলেন না।

 কাঁঠালিয়ায় মতিবাবু এবং অন্নপূর্ণা বিবাহের দিনক্ষণ আলোচনা করিতে লাগিলেন,কিন্তু স্বাভাবিক গোপনতাপ্রিয় সাবধানী মতিবাবু কথাটা গোপনে রাখিলেন।

 চারুকে ধরিয়া রাখা গেল না। সে মাঝে মাঝে বর্গির